এলএনজি আমদানির কারণে রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার ব্যয় বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার পেট্রোবাংলাকে ১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। দেশে গতবছরের আগস্ট থেকে এলএনজি আমদানি শুরুর পর এই প্রথমবারের মতো পেট্রোবাংলাকে ভর্তুকি দেয়া হলো। যদিও পেট্রোবাংলা গতবছরের অক্টোবরেই অর্থ মন্ত্রণালয়ে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের জন্য ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ওই বাবদ কোনো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এলএনজি আমদানির কারণে পেট্রোবাংলার আমদানি খরচ বেড়েছে। কিন্তু কতটুকু বেড়েছে এবং কতটুকু ভর্তুকি দেয়া দরকার তার জন্য অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। সেজন্য পেট্রোবাংলাকে অটোমেটেড সফটওয়্যার এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিংয়ের (ইআরপি) মাধ্যমে লেনদেন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে পেট্রোবাংলা বলছে, এ সফটওয়্যারের ব্যবহার শুরু করতে আরো সময় লাগবে। বর্তমানে পেট্রোবাংলা গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস গড়ে সাড়ে ৬ টাকায় কিনে। আর প্রতি ঘনমিটার এলএনজির দাম প্রায় ৩৮ টাকা। দেশীয় গ্যাসের সাথে এলএনজি মিশিয়ে বিক্রির কারণে গ্যাসের গড় দামও বেড়ে গেছে।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে দেশের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখান থেকে দৈনিক প্রায় ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস এলএনজি থেকে রূপান্তরিত হয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি ওই টার্মিনাল পরিচালনা করছে। আর কাতারের রাসগ্যাস এবং ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে এলএনজি আমদানি হচ্ছে। তবে চলতি বছরই সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল চালু হবে। সেটি থেকেও দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট রূপান্তরিত গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। তখন পেট্রোবাংলার আর্থিক ঘাটতি এবং ভর্তুকির চাহিদা আরো বাড়বে।
সূত্র আরো জানায়, পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন কোম্পানিগুলো ঘাটতি মেটাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে। ওই লক্ষ্যে আয়োজিত গণশুনানিও শেষ হয়েছে। আর শুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাম সমন্বয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা দিবে ওই খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার পরিচালক অর্থ হারুন-অর-রশিদ জানান, পেট্রোবাংলা গত মার্চ পর্যন্ত ৩ হাজার কোটি টাকা আর্থিক ঘাটতিতে ছিল। চলতি এপ্রিলের যে টাকা পাওয়া গেছে তা দিয়ে বর্তমান ঘাটতির এক-তৃতীয়াংশ মেটানো যাবে। সামনে এলএনজি আমদানি আরো বাড়বে। আর গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ও ভর্তুতির মাধ্যমে তা সমন্বয় করতে হবে।