উপজেলার টঙ্গিবাড়ীর ধলেশ্বরী নদীর পাড় ও লৌহজং উপজেলায় পদ্মা নদীর চরের খাসজমি ও মাটি কেটে কিক্রি করা হচ্ছে প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে। সরোজেিন দেখাগেছে ,মাটি কাটার ভলগেট বসিয়ে ট্রলারে করে আসপাশের বাসা বাড়ি সহ জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় এই মাটি বিক্রি করছেন তারা। এছাড়া টঙ্গিবাড়ীর উপজেলার উত্তর রায়পুরা ও দক্ষিণ রায়পুরা এবং লৌহজংয়ের সামুর বাড়ির দক্ষিণে পদ্মার চরের মাটিও দিনরাত প্রকাশ্যে ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এই মাটি বিক্রির সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও জলদস্যুরা সম্পৃক্ত থাকায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। আর অবৈধভাবে এ মাটি কেটে লুট করার কারণে নদী ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন তিন টি গ্রামের অধিবাসিরা। এদিকে লৌহজং পদ্মা নদীর চরের মাটি কেটে লৌহজং-ডহুরী নদী দিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ধর্মগঞ্জের একাধিক ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।তারা আরো বলেন, লৌহজংয়ের একটি এ মাটি লুটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এলাকাবাসীর তথ্যমতে এ সিন্ডিকেটের এক প্রভাবশালী নেতা সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টাকরা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি। তবে তার সহযোগী নজরুল জানান, পদ্মার চরের যেখানে মাটি কাটা হচ্ছে, তা শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পড়েছে।এ কাজের নেতৃত্বে রয়েছেন ”সাহাবুদ্দিন, তিনি তার সঙ্গে কাজ করেন। সিন্ডিকেটের অন্য আর এক সদস্য জানান, অনেক দিন ধরেই পদ্মার চরে মাটি কাটা হচ্ছে। ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ও মাঝে মধ্যে সাড়াদিনও চলে এ মাটি কাটা। এদিকে স্থানীয়রা জানান, সাহাবুদ্দিন সিন্ডিকেটের লোক জন উপজেলার লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ভোজগাঁও ও ব্রাহ্মণগাঁওয়ের পদ্মার তীরের মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করে যাচ্ছে।
এ ব্যপারে তেউটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড সদস্য ইয়াছিন মিয়া ও ৬নং ওয়ার্ড সদস্য সোবহান চোকদার জানান, সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে পদ্মার চরের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ও তার লোকজনের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। তাই সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে,মনে করছেন তারা।লৌহজং ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সর্বশেষ রেকর্ড অনুযায়ী পদ্মার চরের ওই জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। শুধু সরকারি কেন, ব্যক্তি মালিকানার কৃষিজমি থেকে মাটি কাটা হলেও সরকারি অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করে দ্রƒত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
লৌহজংয়ের ইউএনও কাবিরুল ইসলাম খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পদ্মার চরে অবৈধভাবে মাটি কাটার কথা শুনেছেন। ইতোমধ্যে এমন অভিযোগও পেয়েছেন। স্থানীয় তহসিলদারকে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নামের তালিকা করতে বলা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে ভূমিদস্যুদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না ।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার এলাকাবাসী জানান, উত্তর রায়পুরা গ্রামঘেঁষা ধলেশ্বরী তীরের সরকারি খাসজমির মাটি কাটার কাজে শ্রমিকদের তদারকি করেন আবদুল মতিন। আর দক্ষিণ রায়পুরা নদীতীরের সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমির মাটি কাটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবুল কাশেম দেওয়ানের ছেলে কামাল দেওয়ান। সেই মাটি তার চাচাতো ভাই সোহেল দেওয়ানের মাধ্যমে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। কামাল দেওয়ানের সিন্ডিকেটে ওই এলাকার রসিদ খান, রফিজ খানসহ তাদের লোকজন জড়িত ।
টঙ্গিবাড়ী ইউএনও মোসাঃ হাচিনা আকতার বলেন অভিযোগ পেয়েছি । স্থানীয় তহসিলদারকে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নামের তালিকা করতে বলেছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।