নীলফামারী জেলার চড়ালকাটা নদী সোজাকরণ এবং বুড়িতিস্তা নদীর তীর সংরক্ষণে ১৪৭ কোটি ৫৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বর্তমান সরকারের সপ্তম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সদ্য এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। নীলফামারী জেলার চড়ালকাটা নদী সোজাকরণ এবং বুড়িসিস্তা নদীর তীর সংরক্ষণ-শিরোনামের এই প্রকল্পটি পুরোটাই সরকারী অর্থায়নে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। পাউবো সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে বুড়িতিস্তা নদীর ১৩ কিলোমিটার পুনঃখনন, চড়ালকাটা নদীতে ৭৫০ মিটার লুপ-কাট খনন, চড়ালকাটা নদীতে ৮৫ মিটার ক্লোজার নির্মাণ, লুপ-কাট স্থানে প্রতিরক্ষামূলক ১.৫০ কিলোমিটার, নদীর তীর সংরক্ষণ ৩.৬৪ কিলোমিটার, ৫৫ মিটারের একটি ব্রীজ নির্মাণ, একটি ড্রপ স্ট্রাকচার নির্মাণ, নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ১.১৮ কিলোমিটার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত ও পুনরাকৃতিকরণ ২৫ কিলোমিটার এবং জমি অধিগ্রহণ করা হবে ১৩ একর। উল্লেখ্য যে, দেওনাই-চড়ালকাটা-যমুনেশ্বরী নদীটি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার নিম্নাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে নীলফামারী ও রংপুর জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দিনাজপুর জেলার করতোয়া নদীতে পতিত হয়েছে। নদীটি সর্পিলাকার ও দৈর্ঘ্যে প্রায় ১১৬ কিলোমিটার। নদীটি নীলফামারী সদর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার কাছে একটি বড় লুপের সৃষ্টি করেছে, যার ফলে নদীর পাশ্ববর্তী বাজার, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, গ্রামগঞ্জ, রাস্তা, কবরস্থান ইত্যাদি নদী ভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বুড়িতিস্তা নদীর উভয় তীরে ১৯৮০ থেকে ১৯৮১ সালে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দীর্ঘদিন যাবত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব না হওয়ায় বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধটির কার্যকারিতা হুমকির সম্মুখীন। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৮ সালে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে।