নজরুলসংগীতের বরেণ্য শিল্পী, গবেষক, স্বরলিপিকার ও সংগীতগুরু খালিদ হোসেন গুরুতর অসুস্থ। রাজধানীর জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ৯ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন একুশে পদক পাওয়া এই শিল্পী। ৮৪ বছর বয়সি এই শিল্পী অনেক দিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছেন। ইদানীং তার কিডনির জটিলতা বেড়েছে। ফুসফুসেও সমস্যা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে।
চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসেই হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। তখন দুই-তিন দিন হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি থাকেন। কিন্তু ৪ মে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এখন তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে আসিফ হোসেন। খালিদ হোসেনের চিকিৎসার জন্য এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে ১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর খালিদ হোসেনের জন্ম। দেশ বিভাগের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে তিনি চলে আসেন কুষ্টিয়ার কোর্টপাড়ায়। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করছেন। দীর্ঘদিন ধরে নজরুলসংগীতের শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত আছেন। দেশ-বিদেশে তার অসংখ্য ছাত্রছাত্রী রয়েছে।
খালিদ হোসেনের গাওয়া নজরুলসংগীতের ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। আরো আছে একটি আধুনিক গানের অ্যালবাম ও ইসলামি গানের ১২টি অ্যালবাম। তিনি ২০০০ সালে একুশে পদক পেয়েছেন। এ ছাড়া পেয়েছেন নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদক, কলকাতা থেকে চুরুলিয়া পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা।
খালিদ হোসেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ডে সংগীতের প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুলসংগীতের আদি সুরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য তিনি।