জাতীয় পতাকা শুধু একাটি কাপড় নয়। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময় অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশের পতিচ্ছবি বহন করে আমাদের জাতীয় পতাকা। আমরা সকলেই এই পতাকা মাঝে খুজে পাই হারানো শহীদের। তাই সরকারি ভাবে জাতীয় পতাকা ব্যবহারের বিধি-বিধান বর্ণিত রয়েছে। কিন্তু রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার দুই-শাখাতে কর্মদিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও ওই দুই ব্যাংকে ঘটছে ব্যতিাক্রম ঘটনা। ওই দুই ব্যাংক ভবনের অফিস সময়ে জাতীয় পতাকা ওড়ে না। এমনকি তাদের কাছে জাতীয় পতাকা তৈরী নেই এবং পতাকা উত্তোলনের জন্য স্ট্যান্ডটিও চোখে পড়েনি। এই নিয়ে উপজেলার সচেতন মহলবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগসহ রয়েছে সাধারণ দিন ছাড়াও বিশেষ দিবসগুলোতে তাদের অফিসে তারা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন না।
জানা গেছে, পতাকা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের নিদর্শন। তাই সব সরকারি-বেসরকারি ভবন, অফিস এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভবনে সব কর্মদিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধান রয়েছে। জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত-২০১০) অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠানে সব কর্মদিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা বাধ্যতামুলক। কিন্তু রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর কালাই ও মোসলিমগঞ্জ ওই দুই শাখায় অফিস ভবনে কর্মদিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয় না। অন্যদিকে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের উপজেলার দুই শাখায় ব্যবস্থাপকেরা দিনের পর দিন নিজের খেয়াল খুশি মতো অফিস করে থাকেন। আবার ওইসব ব্যাংকে অর্থ সেবা নিতে আসা উপজেলা বিভিন্ন ঋণগ্রাহকদেরকে নানা ভাবে হয়রানিশিকার করাসহ ব্যাংকের সাথে সর্ম্পকিত এলাকার শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গেও খারাপ আচারন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে বহুল প্রচারিত ও সুনামধন্য রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক উপজেলার দুই শাখার সুনামক্ষন্যসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাহকেরা ওই দুটি ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাই এই এলাকাবাসীর দাবী ওই দুই শাখার ব্যবস্থাপকের প্রতি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের উর্ধতন কর্ত্বপক্ষ কঠোর নজরদারি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন উপজেলাবাসী।
ঋণ না পাওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশ না কারা শর্তে কয়েক জন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কালাই শাখায় ঋণসেবা নিতে আসা জানান, কালাই শাখা থেকে কিছু টাকা লোন নিয়ে তারা কৃষি কাজে কৃষি খাতে ব্যয় করবেন। তাই লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কালাই শাখার ম্যানেজারের কাছে এসে ছিলেন তারা। কিন্তু কালাই শাখার ব্যবস্থাপক অনেক সময় অফিসে আসেন না আবার অফিসে এলে তিনি ঠিক মতো তাদের সঙ্গে কথা বলতেও চান-না। তাই তারা খালি হাতে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা মুনীষ চৌধুরী বলেন, দুঃখ জনক হলেও এই কথা সত্য যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর কালাই ও মোসলিমগঞ্জ ওই দুই শাখায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের নিদর্শন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়না। তবে প্রতিটি সরকারি ভবন, অফিস এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভবনে সব কর্মদিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধান রয়েছে। কিন্তু কেন ওই দুই শাখায় অফিস সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন না তারাই ভালো জানেন। তিনি আরও বলেন, আমি জানতে পেরেছি ওই দুই ব্যাংকের ব্যবস্থাপকেরা খেয়াল খুশি মতো অফিস করেন। আবার অনেক সময় এলাকার কোন মানুষেরা প্রয়োজনে ব্যাংকে গেলে ওই অফিসের অনেক ষ্টাফেরাই তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করে থাকে।
এইসব বিষয়ে অস্বীকার করে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কালাই শাখার ব্যবস্থাপক মো. গোলাম কাবির মুঠোফোনে বলেন, আসলে আমাদের এই রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকটি বিষেশায়িত ব্যাংক, তাই হেড অফিস থেকে আমাদেরকে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে কোন কিছু বলা হয়ানি এবং সেই রকম কোন গুরুত্ব নেই। আর আমি শ্রান্তি বিনোদন ছুটিতে থাকায় গ্রাহক সেবাসহ অন্যান্য সেবার যে কি অবস্থা এই মূহুর্তে বলতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, আপনি যদি আমাদের এই অফিসে এসে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলতেন তাহলে খুব ভালো হতো।