জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এফটি এবং এটিএম বুথের টাকা লোড আনলোড অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বুথ থেকে বিভিন্ন সময় কাস্টমারদেরকে জাল টাকা,ডেমেজ টাকা,ছেড়া টাকাসহ ভাজ করা টাকা দেওয়া হয়। আর এই প্রতারণার কাজটি করে যাচ্ছে ব্যাংকের সাথে যুক্ত এক শ্রেণির লোড আনলোড অসাধু অফিসারেরা বলে এলাকার গ্রাহকেরা জানান।
প্রতারনার শিকার এলাকার গ্রাহক সূত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ী পৌর সভার শিমলা বাজার মেইন রোড সংলগ্ন ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এফটি এবং এটিএম বুথ হতে কাস্টমারেরা অহরহ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। প্রায়ই টাকা উত্তোলনের সময় জাল টাকা,ছেড়া,টোটাফাটা ,ডেমেজ, ভাঁজ করা টাকা কাস্টমারদের কাছে ধরা পড়ে। পরে কাস্টমাররা বলতে গেলে সংশিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বিষয়টি আমরা জানি না আপনারা ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেন। আবার ব্যাংকে গেলে তারা বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিচ্ছু বলতে পারবো না আপনারা লোড আনলোড কর্মকর্তাদের ধরুন। যে কারণে এই বুথে কাস্টমাররা দারুণ ভাবে হতাশা এবং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। গতকাল মঙ্গলবার ১২ টায় জাহাঙ্গীর নামে এক গ্রাহক টাকা তুলতে গেলে ১০ হাজার টাকার ফাইলে তাকে ১ হাজার টাকার একটি ডেমেজ নোট দেওয়া হয়। সে সময় পাশের বিকাশ ও ফ্লেক্সি লোডের মালিক আনোয়ার হোসেন একটি জাল টাকার নোট নিয়ে এসে উপস্থিত হন। তিনি তখন উপস্থিত লোড আনলোড কর্মকর্তাদের টাকাটা দেখান এবং তা ফিরিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু লোড আনলোডের কর্মকর্তারা অস্বীকার করলে বুথের সামনে তখন হৈচৈ বেধে যায়। বিষয়টি জানতে চাইলে পাশের বিকাশের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে ১৫ হাজার টাকা উত্তোলনের সময় বান্ডিলের মাঝে এক হাজার টাকার নোট ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমি ফেরত দিতে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাকে ছেড়া টাকার সাথে ডেমেজ টাকা দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি এটিএম বুথ হতে সব সময় র্নিভেজাল এবং নতুন টাকার নোট অথবা বান্ডিল বের হয়। অথচ এখানে তার উল্টো হয়। আমরা ব্যাংকে যাওয়ার সময় পাই না বলেই তো ডাচ্ বাংলা এটিএম বুথ হতে টাকা উত্তোলন করি। কিন্তু এখানেও দেখছি লোড আনলোড কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে এই ব্যবসা চালানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ওই এটিএম বুথ সংলগ্ন ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংক মাইশা ট্রের্ডাসের প্রোফাইটর ইকবাল হোসেন রিপন বলেন, এই বুথ হতে প্রায়ই জাল টাকা, ছেড়া,টোটাফাটা,ডেমেজ টাকা কাস্টমারদের হাতে ধরা পড়ে। আবার তারা কখনও একই টাকা ভাজ করে দুটি পার্ট করেন। টাকা গুনার সময় একই টাকা দুইবার গুনা হয়। তাতে করে এক হাজার টাকা দুই হাজার টাকা ধরে হিসাব করা হয়। গ্রাহকেরা অনেক সময় ধরতে পারেন আবার কখনও ধরতে পারেন না। এ নিয়ে আমরা বার বার ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছি। কিন্তু তারা বলেছেন এটার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। দায়ী লোড আনলোড কর্মকর্তারা। তাদেরকে ধরলে সব বের হয়ে আসবে। আসলে সরিষাবাড়ী এটিএম বুথে যারা টাকা তুলেন তারা ভিষন দূঃচিন্তায় এবং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বিশেষ করে ঈদুল ফেতরের আগে লেন দেনটা বেশী হয়। তাই এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু প্রতারক চক্র গোপনে জাল টাকা ছড়ানোর কাজটা চালিয়ে যাচ্ছে । এলাকার ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের গ্রাহকেরা অতি দ্রুত সরিষাবাড়ী শিমলা বাজারের এটিএম বুথের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিছেন।