যশোরের কেশবপুর উপজেলার কিশোর তরিকুল ইসলাম (১৫) খুনের রহস্য উন্মোচনের পর এই হত্যাকান্ডে জড়িত আরও তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আটককৃতরা হলো, যশোরের কেশবপুর উপজেলার কমরপোল গ্রামের আজিবার বিশ্বাসের ছেলে খলিলুর রহমান ওরফে লেদ খলিল (৫০), তার ছেলে রবিউল ইসলাম ওরফে রবুল (২৪) ও সাতবাড়িয়া কারিকরপাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে আল আমিন হোসেন (২০)। এরআগে পিবিআই তরিকুল হত্যাকান্ডে জড়িত তার বড় ভাই শরিফুল ইসলামকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে শরিফুল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে তিনি আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সকালে উপজেলার সাতবাড়িয়া পাচানীপাড়া গ্রামের একটি বাগান থেকে তরিকুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা নজরুল ইসলাম কেশবপুর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেন।
পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শরিফুলের স্বীকারোক্তির পর হত্যাকান্ডে জড়িত শরিফুলের চাচা-শ্বশুর খলিলুর রহমান ওরফে লেদ খলিল, শ্যালক রবিউল ইসলাম ও আল-আমিনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার খলিল ও আল আমিনকে তাদের বাড়ি থেকে এবং রবিউলকে এমএম কলেজ এলাকা থেকে আটক করা হয়।
এরআগে স্বীকারোক্তিতে শরিফুল জানায়, স্ত্রীকে পাওয়ার শর্তে তার আপন ভাইকে (তরিকুল) হত্যার প্রস্তাব দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। একপর্যায়ে স্ত্রীকে পাওয়ার আশায় ভাইকে হত্যার প্রস্তাবে রাজি হন শরিফুল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তরিকুলকে খুন করে শরিফুলের শ্যালক রবিউল ও আল-আমিন।
পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আসামি শরিফুল ইসলাম মৃত তরিকুল ইসলামের আপন বড় ভাই। দুই ভাই তার বাবার কাঠমিস্ত্রীর কাজে যোগালদার (সহযোগী) হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার আনুমানিক দুই সপ্তাহ আগে আভিযুক্ত বড়ভাই শরিফুল ইসলাম কেশবপুর থানার কমলপুর গ্রামের রশিদ বিশ^াসের মেয়ে জেসমিন আরাকে বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পর আসামি শরিফুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে শ^শুর বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখান থেকেই তাকে বাবার সাথে কাঠমিস্ত্রির কাজ করার জন্য আসতে হতো। বিষয়টি শরিফুলের শ^শুরবাড়ির লোকজনদের ভাল লাগেনি। তার শ^শুরবাড়ির লোকজন বিশেষ করে শরিফুলের বড় চাচা শ^শুর খলিলুর রহমান ওরফে লেদ খলিল বিষয়টি নিয়ে নাখোশ হন। এরপর পরিকল্পনা মাফিক রবিউল ও আল-আমিন তরিকুলকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়।