ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষ, চলছে রৌদ-বৃষ্টির লুকোচুরি খেলা। কখনো আবার বৈরী আবহাওয়া। নানা প্রতিকূলতা যেন ছুঁতে পারছে না পর্যটকদের। তাই যেন সকল ধরণের প্রতিকূলতা আর বৈরী আবহাওয়াকে পেছনে ফেলে বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ছুটে আসছেন দেশী-বিদেশী ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকেরা। বর্তমানে পর্যটন শহর কক্সবাজার পর্যটকদের পদভারে যেন এক উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। যা আগামি সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন পর্যটন শিল্প নির্ভর ব্যবসায়ীরা। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার পর্যটক। মঙ্গলবার সকালে ও সোমবার বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, শৈবাল ও ডায়াবেটিক হাসপাতাল পয়েন্টসহ বিভিণœ পর্যটন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে-পর্যটকেরা সৈকতের নোনা জলে সকালে গোসল, বিকালে বালুচরে দাঁড়িয়ে অস্তগামী রাঙা সূর্য অবলোকন, পাহাড়ি ঝরনা, মেরিন ড্রাইভ সড়ক পরিদর্শন করে সময় পার করছেন উৎসবের আমেজে।
সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্থা পয়েন্ট ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা গেছে হাজার হাজার পর্যটক লো জেডস্কি ও স্পিডবোটে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে। সাগরের মোহনীয় রূপ দেখে প্রাণ জুড়াচ্ছেন তারা। আবার অনেকে পানিতে গা ভাসিয়ে আনন্দ উল্লাস করছেন। পর্যটকেরা ঢেউয়ের তালে তালে সাগরে গোসল করছেন। বালুরচরে খেলা করছে ছোট্টমনিরা। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক বিদেশি পর্যটকও ছিল চোখে পড়ার মতো। শুধু সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকা নয়, পর্যটকদের পদভাবে মুখরিত প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, আকর্ষণীয় মেরিন ড্রাইভ সড়ক, দরিয়ানগর পর্যটন স্পট, হিমছড়ি, ইনানী, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, রামুর বৌদ্ধ মন্দির, সোনাদিয়াসহ বিভিন্ন নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট। হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, এবারের ঈদে এবং ঈদ পরবর্তী সময়ে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। তাদের সামাল দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঢাকার বিজয়নগর থেকে আসা শামস্-শারমিনা দম্পতি জানান-সমুদ্রের জলরাশির কাছে পৃথিবীর সব সুন্দর যেন ম্লান। সমুদ্রের যে মোহনীয় আবেদন, তা প্রকৃতিপ্রেমী সব মানুষকে কাছে টানবে বলে আমি মনে করি। তাই সুযোগ পেলেই সমুদ্রের কাছে ছুটে আসার চেষ্টা করব। এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। সমুদ্র সৈকতসহ আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা দিতে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকত এলাকায় পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সৈকতে বিচ বাইক নিয়ে টহল অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিষ্ট পুলিশ।