নাটোরের সিংড়া উপজেলার ১নং শুকাশ ইউনিয়নের ২২ জন উপকারভোগী সদস্যের ২২বস্তা ভিজিডি চাউল বিক্রয় করলেন ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ ও সচিব মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার দুপুরে শুকাস ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভিজিডির ২২বস্তা চাউল কিনে নিয়ে যাওয়ার পথে বামিহাল হাসপাতালের সামনে থেকে দুটি আটো ভ্যানসহ এই চাউল উদ্ধার করেন এক সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদুল ইসলাম ও স্থানীয় জনগন। পরে বিকেল ৫টায় সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধারকৃত ২২বস্তা চাউলের মধ্যে ১৯বস্তা চাউল ১৯জন উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে বিতরণ করেন। আর অবশিষ্ট ৩বস্তা চাউল ওই ইউনিয়নের স্টোর রুমে জমা রাখেন। তবে অভিযোগ রয়েছে সুকাশ ইউনিয়নের ওই ২২জন উপকারভোগী সদস্যর নাম ভূয়া। আর এর আগেও এই কার্ডগুলোর চাউল একাধিকবার উত্তোলন করে বিক্রয় করা হয়েছে বলে জানান উপকারভোগী সদস্যরা।
সিংড়া উপজেলা প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ মে উপজেলার শুকাস ইউনিয়নের ২৪৭জন উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে কার্ড প্রতি ৩০ কেজি করে ২৪৭ বস্তা ভিজিডি চাউল বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন ২২৫ বস্তা চাউল বিতরণের পর অবশিষ্ট ২২বস্তা চাউল পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে বিতরণেন জন্য ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ ও সচিব মিজানুর রহমান কে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু ওই ২২বস্তা ভিজিডি চাউল বিতরণ না করে মঙ্গলবার (১১জুন) দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ ও ২নং ওয়ার্ড সদস্য সোহরাব হোসেনের নির্দেশে বিক্রয় করেন ইউপি সচিব মিজানুর রহমান। পরে বামিহাল হাসপাতাল এলাকা থেকে সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় জনগণ দুটি অটো ভ্যান থেকে ২২বস্তা ভিজিডি চাউল উদ্ধার করে। পরে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধারকৃত চাউল উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে বিতরণ করেন। আর এরপর থেকেই ভিজিডির চাউল বিক্রয় ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে ইউপি সচিব মিজানুর রহমান বলেন, চাউল অনেক দিন ধরে পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তাই তিনি চেয়ারম্যান ও মেম্বার এর নির্দেশে বিক্রয় করেছেন।
এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই।
এবিষয়ে ওই ইউনিয়নের ট্যাক কর্মকর্তা সোলায়মান হোসেন বলেন, অবশিষ্ট ২২বস্তা চাউল পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু ২২জন উপকারভোগী সদস্য উপস্থিত না হওয়ায় তা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। এই চাউল বিক্রয়ের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং চাউল উদ্ধার করে ইউএনও স্যার এর সহযোগিতায় তা বিতরণ করা হয়।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, চাউল উদ্ধার করে উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আর ওই ২২জন উপকারভোগীর অনেকেই এর আগে কোনদিন ভিজিডির চাউল পাননি বলে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তবে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।