চলতি মৌসুমে বিছা ও ঘোড়া পোকার উপদ্রব সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পাবনার চাটমোহরের পাটচাষীরা। এ কারণে পাটের ভালো ফলন নিয়েও রীতিমতো শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা। তার উপর ভরা বর্ষা মৌসুমেও পানি না থাকায় পাটের ফলন ব্যাহত হবার আশংকা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা অবশ্য বলছেন, পোকার আক্রমণ তেমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর পাটের খুব ভালো ফলন হবে।
চাটমোহরের গুনাইগাছা ইউনিয়নের জাবরকোল গ্রামের কৃষক রমজান আলী জানান, পাটের ক্ষেতে ছ্যাঙ্গা (বিছা পোকা) লাগছে,পাতা খায়্যা (খেয়ে) শেষ করছে। পাট মোটা হচ্ছে না। ফলন ভালো না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বনগ্রামের পাটচাষী আঃ আজিত বলছিলেন,বৃষ্টির জন্যি (জন্য) ছ্যাঙ্গা একটু কমিছে (কমেছে)। বৃষ্টির আগে ছ্যাঙ্গা বেশি ছিল। ছ্যাঙ্গার জন্যি ফলন কমবেও বলে দাবি করেন তিনি। তবে আগাম আবাদে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে, জানালেন তারা।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানাচ্ছেন, বিছা ও ঘোড়া পোকার আক্রমণে এবছর সাড়ে ৩শ’ হেক্টর জমির পাট ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তবে নাবি আবাদে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হতে পারে। তোষা এবং মেস্তা মিলিয়ে এবছর পাটের আবাদ হয়েছে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান রশীদ হোসাইনী বলছেন,পাটের প্রধান শত্রু বিছা পোকা ও ঘোড়া পোকা। এ পোকার আক্রমণে পাটের ফলন অর্ধেকে নেমে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত মাঠ পরিদর্শন করে পোকার আক্রমণ খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি।
পোকা দমনের জন্য প্রথমে বিষ ছিটাতে কৃষককে বারণ করেন তিনি। জানান, পাতার নিচে ডিমের গাদা দেখামাত্রই পাতাটি ছিড়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এটা করা সম্ভব না হলে, ম্যালাথিয়ন গ্রুপের কীটনাশক প্যাকেটের গায়ে উল্লেখিত মাত্রায় পাটের পাতায় স্প্রে করারও পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি দাবি করেন,কৃষক এখন সচেতন। পোকার আক্রমণ দেখামাত্রই উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শমতে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেন। আবহাওয় অনুকুলে থাকলে পাটের ফলন খুব ভালো হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।