ঝিনাইদহ শহরে মাত্র বিশ দিনের ব্যবধানে তিন মাদক ব্যাবসায়ি পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। মাদক ব্যসায়িরা এলাকার চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত। তারা এলাকায় দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসা করে আসছিল প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে। পুলিশ এদের অনেকবার গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে, কিন্তু তারা জামিনে ফিরে এসে আবার ও ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসা শুরু করে। সর্ব শেষে দিনে দুপুরে পুলিশ তাদের কে গ্রেফতার করতে গেলে পুলিশের উপর চড়াও হয়ে গুলি করে এবং পুলিশ ও পাল্টা গুলি করে ।
ঝিনাইদহ উদয়পুর গ্রামে ১১ জুলাই দুপুরে পুলিশের সাথে গোলাগুলির পর রুবেল হোসেন মন্ডল (৩০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশ তার কাছ থেকে ৭০০ পিস ইয়াবা, একটি বন্দুক ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। ৬ মামলার আসামী রুবেল উদয়পুর গ্রামের ছমির উদ্দীন মন্ডলের ছেলে। ১১ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে মাদকের একটি বড় চালান নিয়ে রুবেল উদয়পুর এলাকা দিয়ে শহরে প্রবেশ করছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রুবেল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের গোলাগুলির পর রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। ঝিনাইদহ সদর থানাসহ বিভিন্ন উপজেলায় রুবেলের বিরুদ্ধে ৬টি মাদক মামলা রয়েছে।
অপর দিকে ২৩ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রাম থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শহিদুল ইসলাম (৫০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঐ দিন দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশী পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও ৫’শ ৫০ পিচ ইয়াবা। শহিদুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান ফকিরের ছেলে।ঘটনার দিন মথুরাপুর গ্রাম থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকের চালান নিয়ে ঝিনাইদহ শহরে আসছে। এমন খবরের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করতে উদ্বত হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শহিদুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় অ¯,¿ গুলি ও মাদক।শহিদুল ইসলামের নামে ঝিনাইদহ সদরসহ বিভিন্ন থানায় ১১ টি মামলা রয়েছে।
৩০ জুন ঝিনাইদহে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মসিউর রহমান নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খাজুরা মিস্ত্রিপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৫০ বোতল ফেন্সিডিল, একটি বিদেশী পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি।
পুলিশ জানতে পারে,অস্ত্রসহ একাধিক মামলার আসামি মসিউর রহমান খাজুরা এলাকা থেকে মাদকের চালান নিয়ে শহরে আসছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় মসিউর রহমান পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি বর্ষন করতে যায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এতে মসিউর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার কাছ থেকে ফেন্সিডিল, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। মসিউর রহমানের নামে ঝিনাইদহ সদর থানায় মাদক, অস্ত্র ও ডাকাতিসহ মোট ৯ টি মামলা রয়েছে। ঝিনাইদহে মাত্র ২০ দিনে মাদক ব্যবসায়িরা পুলিশের সাথে গুলি বিনিময় করতে গিয়ে ৩ মাদক ব্যবসায়ি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিতসা করিয়ে জেলহাজতে পাঠায়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান জানান, এলাকায় কোন মাদকের ব্যবসা ও সেবন করতে দেওয়া হবে না। তারা যতই শক্তিশালি হোক না কেন আইন প্রয়োগকারি সংস্থা তাদের কে প্রতিহত করবে। পুলিশ মাদক অভিজানে গেলে তারা দলগত ভাবে পুলিশের লক্ষ করে গুলি চালায় এবং পুলিশ ও পাল্টা গুলি করলে তারা ৩ জন আহত হয়। পুলিশ পৃথক স্থান থেকে মাদক,অস্ত্র,গুলি উদ্ধার করে।