চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেছেন- একাধারে এক সপ্তাহ বৃষ্টির কারণে তীব্র যানজটে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার ডেলিভারি অন্তত এক তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। সিসিটি, এনসিটিতে আড়াই থেকে তিন হাজার কনটেইনার ডেলিভারির অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে। কিন্তু এটি ৮শ’ থেকে ৯শ’ বক্সে নেমে এসেছে এখন। অথচ জাতীয় অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের যানজটের কবল থেকে রক্ষা পেতে বিমানবন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের জন্য বিকল্প সড়ক রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। চট্টগ্রাম চেম্বার অফিসে এক প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন। তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ-সভাপতি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বহু ব্যবসায়িক এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দায়িত্বেও রয়েছেন। সমাজসেবা, ব্যবসা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান উল্লেখ করার মত।
বন্দরের যানজট প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধতা ও অতিবৃষ্টির কারণে বন্দরমুখী ট্রাক- কাভার্ডভ্যানের চাপ ক্রমেই বেড়েছে। আশাকরি আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে। শহরের প্রধান সড়কে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা প্রয়োজন। তবে বন্দর ও বিমানবন্দরের কারণে এক্ষেত্রে বাইপাস সড়ক না করা ছাড়া সম্ভব নয়। একটি সেতু যখন ভেঙে পুনরায় করা হয় তখন পাশে বিকল্প সেতু ও সড়ক অবশ্যই তৈরি করা হয়। যাতে যান চলাচলে কোন ধরণের ব্যাঘাত না ঘটে। বন্দর ও বিমানবন্দর রুটের স্বাভাবিক যানচলাচল বহাল রেখে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা সময়ের দাবি। লাইফলাইন বন্ধ করা যাবে না। করলে চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমে আসবে।
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে যদি ৪ হাজার টিইইউ’স কনটেইনার থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে ৮ হাজার ট্রাক প্রবেশ করে। তবে এক্ষেত্রে ১ জন চালক ও ১ জন সহকারী মিলে ১৬ হাজার মানুষ বন্দরে প্রবেশ করেন। এতে আইএসপিএস কমপ্লায়েন্স পোর্ট করতে হলে আমাদের আরো নিয়ম কাঠামোতে আসতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব উদ্যোগও নিয়েছে। এখন সহযোগিতা করতে হবে সবাই। আইএসপিএস কমপ্লায়েন্সে ব্যর্থ হলে চট্টগ্রাম বন্দর যেমন মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে পিছিয়ে পড়বে। আবার আমাদের তৈরি পোশাক খাতসহ সব রফতানিও তলানিতে পৌঁছবে।
তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন আরো বলেন, বর্তমানে বন্দরে কাস্টম হাউসের যে স্ক্যানার মেশিনগুলো আছে সেগুলোর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বন্দর কর্তৃপক্ষ অত্যাধুনিক অটো স্ক্যানার মেশিন স্থাপন করলে হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারি কার্যক্রম আরও গতিশীলতা হবে। প্রতি গেটে স্ক্যানারও থাকবে। কনটেইনারে বেআইনি ও নিষিদ্ধ পণ্য থাকলে গেট খুলবে না। যারা স্ক্যানার সরবরাহ করবে তাদের প্রশিক্ষিত জনবলও থাকবে। আর তারা বন্দরের লোকজনকে প্রশিক্ষিত করবে। তাছাড়া যানজট নিরসনে যত দ্রুত সম্ভব বন্দরের বে টার্মিনাল এলাকায় ট্রাক টার্মিনাল ও ডেলিভারি ইয়ার্ড স্থানান্তর করা হোক জরুরী ভিত্তিতে।