পাগলীটাও মা হয়েছে কিন্তু বাবা হয়নি কেউ! বরগুনার তালতলী উপজেলায় অজ্ঞাতনামা এক পাগলী নবজাতক কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে। এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের বারোঘর গ্রামে শুক্রবার রাতে। খবর পেয়ে রবিবার তালতলী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত দুই মাস পূর্বে অজ্ঞাতনামা ওই পাগলী তালতলী উপজেলার বারোঘর বাজারে এসে অবস্থান নেয়। ওই সময় থেকে ওই বাজারের বসবাস করে আসছে সে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দেয়া খাবার খেয়ে দিনাতিপাত করছেন তিনি। শান্ত স্বভাবের হওয়ায় কেউ তাকে তাড়ায়নি। গত শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে পাগলীটা প্রচন্ড ব্যাথায় চিৎকার করতে থাকে। বাজারের কেউ ওই পাগলীর ব্যথার যন্ত্রনা বুঝতে পারেনি। পাগলীর ডাক চিৎকারে স্থানীয় ডলি বেগম, সামের্তবান, ফাতিমা, ফিরোজা ও ময়না এগিয়ে আসে। তারা এসে পালগীর ব্যথার কারণ বুঝতে পারে। পরে পাগলীকে ফাতিমার বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রায় ঘন্টা তিনেক পরে ওই পাগলি একটি ফুটফুটে কন্যা শিশুর জন্ম দেয়। মা ও শিশু কন্যা দুজনই সুস্থ আছেন। সকাল হতে না হতেই শনিবার এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন ওই নবজাতক ও পাগলীকে দেখার শতশত মানুষ ফাতেমার বাড়ীতে ভীড় করছে। ওইদিন থেকেই পাগলী ও তার নকজাতক কন্যা ফাতিমার বাড়ীতে আবস্থান করছে। ওই বাচ্চাটিকে দত্তক নেয়ার জন্য ওই উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গির মাঝি আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রবিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ওই পাগলী ও শিশু কন্যা সুস্থ্য আছেন। তবে এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ ওই পাগলীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়নি। ওই পাগলী ও শিশু কন্যাকে দেখতে শত শত মানুষ আশ্রয়দাতা ফাতেমার বাড়ীতে আসছে। দেখতে আশা মানুষগুলোর দাবী শিশুটির মাকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করে শিশুটির প্রকৃত বাবাকে খুঁজে বের করা।
আশ্রয়দাতা ফাতিমা বেগম বলেন, রাত দেরটার দিকে ওই পাগলী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ‘আমি এখন ওই পাগলী ও তার নবজাতকে দেখাশোনা করছি। মা ও শিশু দু’জনই সুস্থ আছে। এই নবজাতকের পিতৃ পরিচয়টা উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই। তিনি আরো বলেন, পাগলীটা আবোল-তাবোল কথা বলছে। তবে সে বলেছে তার বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কালিকা পুর গ্রামে। তার নাম রুবিনা ডাক নাম কুলসুম।
তালতলী উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ এনায়েত সিকদার বলেন, শান্ত স্বভাবের ওই পাগলী গত দুই মাস ধরে বাজারে বসবাস করছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দেয়া খাবার খেয়েই বেঁচে আছে। একজন পাগলকে যারা এ অপকর্ম করেছে তাদের বিচার দাবী করছি।
তালতলী থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়েছি। খোঁজ নিয়েছি মা ও শিশু সুস্থ্য আছেন।
তালতলী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। খোঁজ খবর নিয়ে মা শিশু কন্যার ভালো থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ওই এলাকার স্বাস্থ্য সহকারী পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাশ শুভ বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। এখনই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।