ছেলেধরা সন্দেহে প্রতিদিন একাধিক গনপিটুনির শিকার হচ্ছেন মানসিক প্রতিবন্ধিসহ নিরাপরাধ পথচারী মানুষ। এই গুজবে কান না দিয়ে সন্দেহজনক কাউকে দেখলে সাথে সাথে পুলিশে খবর দিতে জেলার প্রতিটি উপজেলা ও জেলা শহরে মাইকিং করছে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ।
বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে লালমনিরহাট জেলা শহরের পৌরসভার জুম্মাপাড় এলাকায় এমন মাইকিং করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতুর নির্মান কাজে শিশুর মাথা লাগে তাই ছেলেধরা বের হয়েছে মাথা সংগ্রহ করতে। এমন একটি গুজবে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে লালমনিরহাট জেলার মানুষ। তাই হাতে ব্যাগ বা বস্তা জাতিয় এমন কিছুসহ অপরিচিত মানসিক প্রতিবন্ধি বা পথচারী লোক দেখলেই কতিপয় অতিউৎসাহি মানুষ গনপিটুনি শুরু করে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে জনগনকে আতঙ্কিত করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার লালমনিরহাট সদর উপজেলার মুল শহরে এক নারীকে এবং সোমবার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর চৌপতিমোড় ও নামুড়ী এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে ৩জন মানসিক প্রতিবন্ধি গনপিটুনির শিকার হন। এমন আতঙ্কে জেলার বিদ্যালয় গুলোতে কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। নিজের কাজ ফেলে বাবা-মা’রা ছেলে মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন এবং নিয়ে আসছেন।
এ গুজব থেকে মানুষকে সচেতন করতে জেলা পুলিশ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। জেলার অলিগলি মাইকিং করে জনগনকে গুজব সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। অপরিচিত বা কাউকে কোন রুপ সন্দেহ হলে নিকটস্থ থানায় অথবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। সন্দেহ হলেই কেউ অপরাধী নয়। আর এ সন্দেহজনক ভাবে ছেলেধরা বলে কাউকে গনপিটুনি দিয়ে হত্যা করা একটি ফৌজদারী অপরাধ। গুজবে কান দিয়ে আতঙ্কিত না হতেও আহবান জানানো হয় মাইকিংয়ে।
এছাড়াও এ গুজব থেকে জনগনকে সড়ায়ে আনতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে চলছে জেলা পুলিশের বিশেষ সভা ও সেমিনার।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক পিপিএম জানান, ছড়িয়ে পড়া ছেলে ধরা গুজব ঠেকাতে জনসচেতনতা প্রয়োজন। তাই গ্রাম গঞ্জ সর্বত্রই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। অপরিচিত কাউকে কোন রুপ সন্দেহ হলে আইন হাতে তুলে না নিয়ে নিকটস্থ পুলিশকে খবর দিন। সন্দেহ হলেই কেউ অপরাধী নয়।
মাথা কাঁটা বা ছেলে ধরা এটা একটি গুজব মাত্র। এই গুজবে কান না দিতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।