দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ছেলেধরা ও কল্লাকাটা গুজব। প্রায় এমন নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে দেশের বিভিন্নস্থানে প্রাণ হারিয়েছেনও কয়েকজন। জনসচেতনতায় প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা থাকলেও গুজবে সোচ্চার একশ্রেণির অতি উৎসাহীরা। ফলে এর প্রভাব পড়েছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ভিক্ষুক ও ফেরিওয়ালাদের উপর। ভয়ে ঝুলি হাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেননা তারা। এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে উপজেলার গ্রামগুলোতেও।
সাম্প্রতিক সময়ে ছেলেধরা ও কল্লাকাটা গুজব প্রতিরোধে জনসচেতনতায় ফেঞ্চুগঞ্জে মাইকিং, বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জোরালো ব্রিফিং করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এমন সন্দেহে আইন হাতে তুলে না নিয়ে স্থানীয় থানায় অথবা ৯৯৯ এ কল করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন থেকে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদর ও ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারে সরেজমিন ঘুরে ঝুলি হাতে ভিক্ষুকদের তেমন কোন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। তাছাড়া ভিক্ষুকদের উপস্থিতিও কম। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান প্রায় ৮/১০ দিন থেকে এমনটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এ সময় ফেঞ্চুগঞ্জ পূর্ব বাজারের ব্যবসায়ী হোসেন আহমদ জুয়েল, সাহিল মিয়া, মধ্য বাজারের নেপাল দেবনাথ, জেঃ ওসমানী সড়কের নজমুল খান, বালু বিক্রেতা ইসলাম আলী ও পশ্চিম বাজারের আশরাফ জানান, গত ৮/১০ দিন থেকে ঝুলি হাতে ভিক্ষুকদের দেখাই যাচ্ছেনা। ছেলেধরা আতঙ্কে হয়তো তারা ঘর থেকে বের হচ্ছেননা। সারাদিন ভিক্ষা করে যা উপার্জন হতো তাতেই চলতো তাদের অভাবের সংসার, এমন আক্ষেপই করলেন সচেতন এই ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া রাজনপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান লিপন ও মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, ঝুলি হাতে ভিক্ষুক ও ফেরিওয়ালাদের ইদানীং দেখা যাচ্ছেনা। ছেলেধরা আতঙ্কে গণপিটুনির ভয়ে এমন হতে পারে জানিয়েছেন তারা।
এমন অবস্থায় বিশিষ্ট গীতিকার ও লেখক ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন ইসকা তাঁর ফেইসবুক এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন- “কল্লাকাটা গুজব ও গণপিটুনীর কারণে গত কয়েকদিন ধরে ভিক্ষুকের দেখা মিলছে না। নিয়মিত আসা ফেরিওয়ালারা আসছেন না। প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠির জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। গুজবগোষ্ঠির উপর অভিশাপ দিচ্ছি- তোরা দোজখে যা”।