ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের প্রায় সব লঞ্চের অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র মেয়াদ উর্ত্তীণ। যে কারণে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে ওই যন্ত্র থেকে রক্ষা করা যাবেনা। তাই ঈদের আগে আগামি ৫ আগস্টের মধ্যে ক্রটি মুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই তারিখের পর বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা প্রত্যেক লঞ্চ পরির্দশন করবেন।
পাশাপাশি যারা ওই তারিখের মধ্যে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলো ক্রটি মুক্ত করতে পারবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জনকণ্ঠকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের আয়োজনে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে নৌ ও সড়ক পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে বিশেষ সমন্বয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি রুটের বিআরটিসির বাসের ছাঁদ ফুটো। সেখান থেকে পানি পরে যাত্রীরা বসতে পারেনা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বিআরটিসিকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক লঞ্চ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ঈদের আগে পরিশোধের জন্য লঞ্চ মালিকদের অনুরোধ করেন। পাশাপাশি স্টাফ কেবিনসহ চাদর বাণিজ্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা উল্লেখ করেন।
পারাবত-১১ লঞ্চ বন্ধ করে দেয়ার হুশিয়ারী ॥ পারাবত-১১ লঞ্চের মাস্টারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। অন্যথায় আসন্ন ঈদ উল আযহায় বিশেষ সার্ভিস থেকে লঞ্চটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত ১৮ জুলাই রাতে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালে ফেরার পথে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের মিয়ারচর নামকস্থানে এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চকে ধাক্কা দেয় পারাবত-১১ লঞ্চ। এতে সুন্দরবন লঞ্চটির ৫০ ফুট জায়গা জুড়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। ফলে লঞ্চটির প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার পর পারাবত-১১ লঞ্চের মাস্টারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। তাই পারাবত-১১ লঞ্চ মালিক পক্ষকে ঈদের আগেই অভিযুক্ত মাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সড়ক ও নৌপথে অসুস্থ প্রতিযোগিতা করা যাবেনা ॥ জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেছেন, সড়ক ও নৌপথে অসুস্থ প্রতিযোগিতা করা যাবেনা। এ থেকে বিরত থাকার জন্য পরিবহন ও নৌযান চালকদের পাশাপাশি মালিকদের আরও সচেতন হতে হবে। এ সময় তিনি নিয়ম মেনে সড়ক ও নৌপথে পরিবহন ও নৌযান চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন। একইসাথে সরকারী আইন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়ম অমান্যকারী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক বলেন, যার যার অবস্থান থেকে সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। একে অপরের ঘারে দোষ না চাপিয়ে কোরবানির ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা যাতে নির্বিঘœ ও আরামদায়ক হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টার্মিনালে যাত্রী হয়রানি করা যাবেনা এবং খেয়াল রাখতে হবে ভাড়া যেন না বাড়ে। জেলা প্রশাসক বাস মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন কোন বাস চালক একনাগারে ২৪ ঘন্টা গাড়ি না চালায়।
ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিশেষ সমন্বয় সভায় স্পেশাল সার্ভিসের সময় নদীপথে বালুবাহী বাল্কহেডসহ ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা, লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করা, সরু চ্যানেলে (মিয়ারচর) পাশাপাশি দু’টি লঞ্চ চলাচল না করা, নদী তীরের সিগনাল বাতিসহ সাংকেতিক চিহ্ন ঠিক রাখা এবং নদীর মধ্যে কোনো লঞ্চ না থামানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একইসাথে সড়ক পথে ফিটনেসবিহীন মোটরযান সড়কে চালনা এবং এতে যাত্রী পরিবহন না করা, অনবিজ্ঞ ও লাইসেন্সবিহীন চালক-হেলপার দিয়ে মোটরযান চালনা থেকে বিরত থেকে ওভারলোডে যাত্রী পরিবহন না করা, চালকদের সময়মতো বিশ্রাম নিতে দেওয়া, ভাড়া ঠিক রাখা, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে জেলা প্রশাসন, বিআরটিএ ও পুলিশ প্রশাসন আলাদা ও যৌথভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।