রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কামার শিল্পীরা পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দম ফেলার যেন সময় পাচ্ছে না তারা। রাতদিন টুং টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে হাটবাজারসহ কামারবাড়ি।
জানা গেছে, উপজেলার আড়ানী, বাঘা, বাউসা, মনিগ্রাম, গড়গড়ি, পাকুড়িয়াসহ বিভিন্ন হাটবাজারে কামারদের বাড়িতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, বঁটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করছেন কামাররা। এইসব ব্যবহার্য জিনিস স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো পুড়ে দা, বঁটি, চাপাতি, চাকুসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করছে কামাররা। বর্তমান আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে ওই শিল্প।
আড়ানী বাজারের কামার শিল্পী শিবেন চন্দ্র কর্মকার জানান, একসময় কামারদের যে কদর ছিল বর্তমানে তা আর নেই। মেশিনের সাহায্যে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে ফলে তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষ আকর্ষণ হারাচ্ছে। হয়তোবা একসময় এ পেশা আর থাকবে না। তবে কোরবানির ঈদের সময় একটু আশাবাদী হই। পূর্ব পুরুষরা এ কাজ করে আসছেন, সারা বছর তেমন কোন কাজ না থাকলেও কোরবানির সময় কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। এ পেশায় আমরা যারা আছি তারা খুবই অবহেলিত। বাবা বিশ্ব নাথ কর্মকারের সাথে ছয় বছর বয়স থেকে এ কাজে জড়িয়ে পড়ি। বাবার পেশা ধরে রেখেছি। বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছে। বর্তমানে ৫ সদস্যের সংসার। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। মেজো মেয়ে স্বপ্না রানী কর্মকার স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এ ছাড়া ছোট মেয়ে পমিলা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে।
একই বাজারের কামার শিল্পী জিতেন কর্মকার ও লক্ষী কর্মকার জানান, এ পেশায় কাজ করে কোন রকম সংসার চলছে। তবে কোরবানির ঈদের সময় একটু চাহিদা বাড়ে। অন্য সময় বেশি সময় বসে বসে পার করতে হয়।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী সরকার বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার সময়ে কামারা বেশি ব্যস্ত হয়ে যায়। এই সময় তাদের দাহিদাও বেশি হয়।