সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও উৎসাহ-উদ্দিপনা আর ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে উদ্যাপিত হয়েছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন তথা শুভ জন্মাষ্টমী। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শুক্রবার সকালে কক্সবাজার শহরের গোলদিঘীর পাড় চত্ত্বর থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা রাধা-কৃষ্ণ, কংস, বসুদেব-দৈবকিসহ বিভিন্ন চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয় নানা সাজে। তাছাড়া বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন জন্মাষ্টমীর শোভযাত্রায় “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে” ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলে পুরো কক্সবাজার শহর। শোভাযাত্রাটি গোলদিঘীর পাড় চত্ত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঘোনারপাড়াস্থ শ্রীশ্রীকৃষ্ণানন্দধাম প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রার আগে অনুষ্ঠিত হয় জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন সভা। কক্সবাজার জেলা জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন রাষ্ট্র, সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। যেখানে অন্যায়-অবিচার ধরাধামকে গ্রাস করেছে, সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়। শুভেচ্ছা জ্ঞাপন সভার উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আশরাফুল আফসার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন, কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক অজিত দাশ, উদয় শংকর পাল মিঠু, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর, পৌর কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশ, সদর পুজা কমিটির সভাপতি দীপক দাশ, পৌর পূজা কমিটির সভাপতি বেন্টু দাশ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন-জেলা জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত পাল বিশু। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র গীতাপাঠ করেন রাধা গোবিন্দ দাস ব্রহ্মচারী ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন নেপাল ভট্টাচার্য্য। উল্লেখ্য-সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, দ্বাপর যুগের শেষভাগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মথুরায় কংসের কারাগারে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, কৃষ্ণ ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর। দুষ্টের দমন করে পৃথিবীতে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি মানুষরূপে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন।