শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে মো. দাদন লস্কর (২৫) নামক এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। দাদন উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালি গ্রামের জামাল হোসেন লস্করের ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানায়, দাদন গোসাইরহাট সরকারি সামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তারা তিন ভাই, এক বোন। দাদন সংসারের বড় ছেলে। তিনি অভাবের সংসারের হাল ধরতে ঢাকা বনানীর একটি হোটেলে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন দাদন। গত ১৫ আগস্ট হঠাৎ জ¦র আসে। পরে জ¦র নিয়েই ২২ আগস্ট শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়ি চলে আসেন তিনি। পর দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় দাদনকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর রক্ত পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর ওই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার। রবিবার বিকেলে দাদনের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু গোসাইরহাটে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে প্রাইভেটকারে সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ডেঙ্গু রোগীটি গোসাইরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন। রবিবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সদর হাসপতালে রেফার্ড করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার সময় পথেই তার মৃত্যু হয়।
দাদনের বাবা জামাল হোসেন লস্কর বলেন, আমরা গবিব মানুষ। কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। সংসারে অভাব দেখে বড় ছেলে দাদন ঢাকার একটি হোটেলে ম্যানাজারি করতো। আজ বাবাটা আমাদের ছেড়ে চলে গেল।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গোসাইরহাটের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন। ঢাকা থেকেই আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরে এসেছিল। জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮১ জন ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
উল্লেখ্য, এ নিয়ে শরীয়তপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিন নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। গত ৩০ জুলাই জাজিরার স্কুল শিক্ষিকা বর্ষা আক্তার (২৭), ৫ আগস্ট ভেদরগঞ্জের ইতালি প্রবাসী হাফসা লিপি (৩০) ও ২১ আগস্ট ডামুড্যার গৃহবধূঁ সুরাইয়া বেগমের (৩৭) মৃত্যু হয়েছে।