বগুড়ায় এক প্রতিবন্ধী শিশুকে হত্যার দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক শারনিম আকতার এই রায় দেন।
বিজ্ঞ আদালতের বিচারক ওই ৫ চার্জশিটভুক্ত ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান ছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন। কোন কারণে সমুদয় টাকা প্রদানে ব্যার্থ হলে তাদের প্রত্যককে আরও তিন বছর করে বিনাশ্রম কারদা-ের আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।
যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্তরা হলেন, বগুড়া শহরের মাটিডালী মধ্যপাড়া এলাকার মাসুদের ছেলে রেহান(২১) একই এলাকার আবদুল কুদ্দুসের ছেলে সাব্বির আহম্মেদ মালু (২০)দুদু মিয়ার ছেলে ইউসুপ(২৫) একই এলাকার মোজামের ছেলে সজিব(২২) এবং বার পুর এলাকার শাহজাহানের ছেলে রাশেদ (২৩)।
জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে শহরের বারপুর এলাকার নিজ বাড়ীর পার্শ্বের একটি দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে প্রতিবন্ধী শিশু রিপন (১৩) নিখোঁজ হয়। সম্ভাব্য সকল স্থানে তার খোজাখুজির পর তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে ঘটনার প্রায় ৫দিন পর ১৫ই নভেম্বর দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে পার্শ্ববর্তি এলাকার চাঁদপুর গড়ের জঙ্গলে নিখোঁজ শিশু রিপনের তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ মেলে।
এ ঘটনায় পর দিন ১৬নভেম্বর তারিখে নিহত শিশু রিপনের বাবা ফারুক আহম্মেদ বাদী হয়ে মোট ৩জনের নাম উল্লেখ করে বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে ১নং আসামি হিসাবে সাব্বির আহম্মেদ মালু ২নং আসামি হিসাবে মোজামের ছেলে সজিব এবং দুদু মিয়ার ছেলে ইউছুপের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন তিনি।
পরে ওই মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে বগুড়া সদর থানার তদকালিন তদন্তকারী কর্মকর্তা জুলহাস আহম্মেদ ২০১৬ইং সালের ১৪ এপ্রিল এলাকার শাহ আলমের ছেলে পাপ্পু (১৫)নামের এক আসামীকে একজন কিশোর অপরাধী হওয়ায় তার বিচার কিশোর অপরাধ আদালতে স্থানান্তর করার পর মোট ৫জন আসামীর বিরুদ্ধে চুড়ান্ত প্রতিবেদন সহ চার্জশিট দাখিল করেন।
ওই মামলায় পুলিশ ২০১৫ ইং ৩০নভেম্বর তারিখে আসামি রেহানকে এবং ২০১৬ইং ৮ই জানুয়ারী মামলার ১নং এজাহার ভুক্ত আসামি সাব্বির আহম্মেদ মালুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরন করেন।
দীর্ঘ শুনানি অন্তে গতকাল (মঙ্গলবার )রায়ঘোষনার নিদিষ্ট দিনে জনার্কিন আদালতে রায় ঘোষণার সময় আসামি রেহান ও সাব্বির আহম্মেদ মালু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য পলাতক ৩ আসামি গ্রেপ্তারের দিন থেকে তাদের সাজা কার্যকর হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ,এ্যাডঃ নাসিমুল করিম হলি এবং এ্যাড ঃ সাব্বির আহম্মেদ বিদ্যুত।আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড ঃ বিনয় কুমার বিশু।