জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের নতুন যুগস্রষ্টা। বিস্ময়কর এক আলো হয়ে জ¦লছেন। পথ দেখিয়ে চলেছেন বাঙালিকে। জাত চেনাতে কবি নিজেই লিখেছিলেন : ‘আমি চির বিদ্রোহেী বীর-/বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!’ তবে শুধু বিদ্রোহী বীর নন, তিনি ছিলেন ‘বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির-গৃহহারা যত পথিকের।’ ‘অবমানিতের মরম- বেদনা, বিষ-জ¦ালা’ নিজের মধ্যে ধারণ করেছিলেন। তাঁর কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে বিপুল সমৃদ্ধি। বাংলা গানের সবচেয়ে বড় ভা-ারটির ¯্রষ্টা তিনি। অসাম্প্রদায়িক এই কবি বাঙালির চিন্তা-মনন ও অনুভূতির জগতে নানাভাবে নাড়া দিয়েছেন।
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর উদ্যোগে জাতীয় কবির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
২৭ আগস্ট ২০১৯ একাডেমীর অস্থায়ী কার্যালয়ে একাডেমি সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তাগণ আরো বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে দেশের আগামীর কর্ণধার, ভবিষ্যত প্রজন্ম শিশু-কিশোরদের কাছে পৌঁছাতে হবে। এ লক্ষ্যে শিশু-কিশোরেরা যেনো কাজী নজরুলকে বেশি বেশি পাঠ করে তা তদারক করা দরকার। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা আছেন তাদের দায়িত্বটা অন্য সব সাধারণের চেয়ে বেশি।
একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুলের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন, স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান কবি সুলতান আহমেদ, স্থায়ী পরিষদের সদস্য গবেষক নূরুল আজিজ চৌধুরী, একাডেমীর সহ-সভাপতি কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছড়াকার মো. নাছির উদ্দিন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক কবি মনজুরুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গল্পকার সোহেল ইকবাল, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক কবি শামীম আকতার ও নির্বাহী সদস্য আবৃত্তিকার কল্লোল দে চৌধুরী।
বক্তাগণ আরো বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম নিজের সকল সৃষ্টির মধ্য দিয়ে প্রেমের কথা বলেছেন। মানবতার কথা বলেছেন। সাম্যের কবি নারীর প্রতি উপেক্ষা কখনও মেনে নেননি। সমাজের নিচু শ্রেণীর মানুষদের কাছে টেনে নিয়েছেন। ধার্মিক মুসলিম সমাজ ও অবহেলিত জনগণের সঙ্গে তাঁর বিশেষ সম্পর্ক থাকলেও সাম্প্রদায়িকতার নিন্দা করেছেন তীব্র ভাষায়। স্বার্থান্ধ মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তিনি। সা¤্রাজ্যবাদবিরোধী এই কবি তৎকালীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কারণে অসংখ্যবার জেল খেটেছেন। জেলে বসেই তিনি লিখেছেন বিখ্যাত ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’। ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এভাবেই দুর্দম গতিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন আজকের নজরুল।
পরে কবিতা পাঠ করেন, মো. নাছির উদ্দিন, মনজুরুল ইসলাম ও কল্লোল দে চৌধুরী।