টঙ্গীর মোল্লাবাড়ি এলাকার বাইতুল আকসা জামে মসজিদের মোতয়াল্লীর অপকর্ম দেখে ফেলায় ইমামকে বহিষ্কারের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের মোতয়াল্লী ও সভাপতি মসজিদ কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়ে একক সিদ্ধান্তে ইমামকে বহিষ্কারের হীন চক্রান্তের চেষ্টায় এলাকার সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, ওই মসজিদের মোতয়াল্লী আবু বকর সিদ্দিক মসজিদের পাশেই টঙ্গী এমদাদুল উলূম মাদ্রাসা নামে একটি মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন। ওই মাদ্রাসায় শিক্ষক সংকট থাকায় মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু হানিফ মাদ্রাসায় নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে গত ২০ জুন ফজরের নামাজের পর থেকে হিফজ বিভাগের ছাত্রসহ অন্যান্য ছাত্রদের ক্লাস চলছিল। এ সময় তার মোবাইলে একটি কল এলে তিনি ছাত্রদের পড়ার শব্দে বুঝতে না পেরে মাদ্রাসার লাইব্রেরী কক্ষের সামনে গিয়ে ফোনটি রিসিভ করেন। এ সময় মসজিদের মোতয়াল্লী আবু বকর সিদ্দিককে মাদ্রাসার পাশ্ববর্তী বাসার এক মহিলার সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। এঘটনার পর থেকে আবু বকর সিদ্দিক তার বেয়াই এবং মসজিদের সভাপতি সরদার আনোয়ার হোসেনের সাথে শলাপরামর্শ করে ইমামকে মসজিদ থেকে বহিষ্কারের পাঁয়তারা শুরু করে। একপর্যায়ে তারা ওই মহিলাকে দিয়েই মাথা ব্যথার ঝাড়-ফুঁকের নাম করে মহিলার বাসায় নিয়ে ‘ইমাম কর্তৃক মহিলাকে কুপ্রস্তাবের’ নাটক সাজিয়ে ইমামকে মসজিদ থেকে বহিষ্কারের ফন্দি আটে। একপর্যায়ে গত কোরবানীর আগে মসজিদ কমিটির কাউকে না বলে এমনকি খোদ মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম মিলটনকেও না জানিয়ে জোর করে ইমামকে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঈদের পরে তিনি মসজিদে যোগদান করলে ইমামকে মসজিদের চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় চলে যেতে বাধ্য করে এবং তাকে মসজিদের ইমামতি থেকে বিরত রেখে মসজিদের মোয়াজ্জিনকে দিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানো হচ্ছে। এতে সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
যোগাযোগ করা হলে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু হানিফ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্র করে মসজিদের ইমামতির পদ থেকে বাদ দেয়ার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। আল্লাহর কসম আমি কোন কিছুর সাথে জড়িত নই। মোতয়াল্লীর অপকর্ম দেখে ফেলায়ই আমার জন্য কাল হয়েছে।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাইতুল আকসা জামে মসজিদের মোতয়াল্লী আবু বকর সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার মাদ্রাসায় অনেক অভিভাবিকা তাদের সন্তানদের নিয়ে আসে। তারা আমার সাথে সন্তানের লেখাপড়ার ব্যাপারে কথা বলতেই পারে। এর অর্থ এই নয় যে কোন অনৈতিক কর্মকা- হয়েছে। বরং ইমামের বিরুদ্ধে ওই মহিলাকে ঝাড়-ফুঁকের নামে ‘কুপ্রস্তাব’ দেয়ার অভিযোগ আসায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ ইমামকে সসম্মানে চলে যেতে বলেছে। এতে আমার কোন দোষ নেই।
যোগাযোগ করা হলে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম মিলটন বলেন, বিগত ৫বছর যাবত বর্তমান ইমাম সম্মানের সাথে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। হঠাৎ করে তার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে কমিটির কাউকে না জানিয়ে বিদায় করে দেয়া খুবই দু:খজনক। এছাড়াও মোতয়াল্লীর বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারি, মসজিদে চুরিসহ বিভিন্ন গুরুত্বর অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে মসজিদের সভাপতি সরদার আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইমামের বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাবে অভিযোগ উঠায় মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেই তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।