উপজেলার লৌহজংয়ের দক্ষিণ মেদিনী মন্ডল গ্রামের ইব্রাহীম (৩৩) কে নির্মমভাবে বিদেশী লোহার টর্চ লাইট দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে বড় বোন ও দুই ভাগিনার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দক্ষিন মেদিনীমন্ডল গ্রামের মাওয়া মৎস আড়ত সংলগ্ন মৃত রতন হাওলাদারের বাড়ীতে এই ঘটনা ঘটেেেছ। এই ঘটনায় লৌহজং থানায় মামলা হয়েছে।এই অভিযোগে নিহতের বড় বোন সুলতানা আক্তারকে জিগ্গাসাবাদের জন্য রাত সাড়ে নয়টায় আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই ভাগিনা পালাতক রয়েছে।
ইব্রাহীম দক্ষিণ মেদিনী মন্ডল গ্রামের মৃত মোঃ রতন হাওলাদারের ছেলে। পারিবারিক ও বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এমন নির্মম ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে এলাকায় অভিযোগ উঠছে।
ইব্রাহীমের স্ত্রী শিরিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ভাগিনা শামীম (১৭) ও সেলিম (২৫) মা সুলতানা আক্তারের (৪০) নির্দেশে আমার স্বামী ইব্রাহীমকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। ইব্রাহীমের স্ত্রী শিরিন আক্তার আরও জানান,তার স্বামীর বোন সুলতানা আক্তার বিয়ের পর থেকেই বাবার বাড়ীতে থাকতো। ইব্রাহিম প্রবাসে থাকাতে তাকে দিয়ে ঝি এর মতো বাড়ি ঘরের সব কাজকর্ম করাতেন। বিভিন্নভাবে ইব্রাহীম ও তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিল এই সুলতানা। ইব্রাহীমের স্ত্রী যাতে বাড়িতে না থাকতে পারে সেই জন্য বিভিন্ন ভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। শুক্রবার বিকালে সুলতানা ও তার দুই ছেলে ইব্রাহীমের স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে বকা ঝকা করতে থাকে। এ সময় ইব্রাহীমের স্ত্রী তার বাবার বাড়ি যেতে চাইলে বাধা দেন বড় ননদ সুলতানা আক্তার। স্ত্রীর সাথে তর্ক বিতর্কের সময় একপর্যায়ে ইব্রাহীম বাড়িতে চলে আসেন। এমন সময় দুই ভাগিনা সেলিম ও শামীম তাদের মা সুলতানা আক্তারের আদেশ পাওয়া মাত্র বিদেশী লোহার টর্চ লাইট দিয়ে মামা ইব্রাহীমকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। একপর্যায়ে লাইট দিয়ে স্বজোরে ঘারের উপর উপর্যপুরি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ইব্রাহীম। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ইব্রাহীমকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
সরোজমিনে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ হলে জানা যায়, ২০১৭ সালে ইব্রাহীমের আপন বড় ভাই মোঃ হাসু হাওলাদার কে এভাবে দুনিয়া থেকে চলে যেতে হয়েছে। যদিও সেই ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছিল। আজ পর্যন্ত সেই ভাই মোঃ হাসুর সন্তান ও স্ত্রীকে এ বাড়ীতে উঠতে দেননি বোন সুলতানা আক্তার। সে সময়ের ঘটনাটি ছিল রহস্যজনক। পদ্মা সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা জমি ও বাড়িতে রেখে যাওয়া বাবার সম্পদ ও ক্যাশ টাকা ভাগা ভাগিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে আপন বোন সুলতানা আক্তার ও তার দুই ছেলের সাথে ইব্রাহীমের বিরোধ চলে আসছিল এ পরিবারে।
এ বিষয়ে লৌহজং থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসাইন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,শনিবার লাশ ময়না তদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।