পঞ্চগড়ে এক আওয়ামী লীগ নেতার রোষানলে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের পরিবার। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী কৃষক লীগের সভাপতি।
জানা গেছে, সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের দক্ষিন প্রধান পাড়া গ্রামে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হেসেনের ৬৫ শতক আবাদি জমিতে স¤্রতি চাষাবাদ করতে গেলে শাহজাহান আলী বাঁধা প্রদান করেন। এবং জমিটি শাহজাহানের বলে দাবি করেন। চাষাবাদে বাঁধা প্রদান করায়, ঝামেলা এড়াতে জমির মালিক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন কাজের লোকজন নিয়ে চলে আসেন। পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য আবুল হোসেন পঞ্চগড় সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে থানা কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষকে থানায় হাজির হতে সময় বেঁধে দেন। জমি নিয়ে আলোচনার সময় বিবাদীপক্ষ শাহজাহান গং জমির কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে থানা কর্তৃপক্ষের কাছে এক মাসের সময় নিয়ে বিরোধীয় জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন।
একপর্যায়ে গত রোববার সকালে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে শাহজাহান আলী নিজের বাড়ির জানালার কাঁচ ও আসবাবপত্র ভেঙ্গে থানায় মামলা দেয়ার চেষ্টা করেন। মামলার বিষয়টি থানা কর্তৃপক্ষ পূর্ব থেকে অবহিত থাকায় মামলা গ্রহণ না করে উভয় পক্ষকে থানায় এসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আহবান জানান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি জমিটি মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন চাষাবাদ করে আসছেন। কিছুদিন আগে শাহজাহান ও তার ভাইয়েরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে জমিটি নিজের বলে দাবি করছে।
এ ব্যাপারে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী কৃষক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, বিরোধীয় জমিটি আমরা দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। এখানে জমির বিষয়টিকে উপলক্ষ করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওসমান আলী আমাকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই বিরোধের প্রধান কারণ গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করি। আমাকে পরাজিত করতে ওসমান দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। সেই থেকে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আসছে।
এ ব্যাপারে বিরোধীয় পক্ষ শাহজাহানের বড়ভাই সফিউল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, জমিটি আমার বাবা আমাদের চার ভাইয়ের নামে ক্রয় করেছে। বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা জমির বিষয়ে জানতান না। কিছুদিন আগে জানতে পারি জমিটি আমাদের। তবে ঠিক কত সালে জমিটি ক্রয় করা হয়েছে এ বিষয়ে কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবু আক্কাছ আহাম্মদ বলেন, কোন পক্ষেরই মামলা গ্রহণ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আজ সন্ধায় উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসার কথা রয়েছে।