নওগাঁর মান্দায় মানিব্যাগ চুরির কথিত অভিযোগ তুলে রেজাউল ইসলাম (৩৮) নামে একব্যক্তিকে সালিশ বৈঠকে হাত বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার রাত ১০ টার দিকে উপজেলার হুলিবাড়ী চকেরহাট চৌরাস্তার মোড়ে স্থানীয় মাতবরদের আয়োজিত সালিশে তাকে এভাবে নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনে গুরুতর আহত রেজাউল ইসলাম বর্তমানে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পারইটুঙ্গী গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে ও পেশায় অটোরিকশা চালক।
সালিশে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে আরেক ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন, নারী ইউপি সদস্য বিলকিস খাতুনের স্বামী দুলাল হোসেন, মাতবর মামুনুর রশিদ, গ্রামপুলিশ সোহেল রানাসহ এলাকার শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
চিকিৎসাধীন রেজাউল ইসলাম জানান, পেশায় আমি একজন অটোরিকশা চালক। শনিবার রাত ৮টার দিকে চকেরহাট প্রমোদ কুমার মন্ডলের দোকানে চা খেয়ে বাড়ি চলে যাই। এ সময় ওই চায়ের দোকানে আরও লোকজন বসা ছিল। পরদিন রোববার মামুনুর রশিদ ও মেম্বার বেলাল হোসেন ঝড়- নামে একব্যক্তির মানিব্যাগ চুরির অভিযোগ তুলে। এ অভিযোগ থেকে বাঁচতে তারা আমার নিকট ১০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় রোববার রাতে গ্রামপুলিশ দিয়ে চকেরহাটে ধরে এনে হাত বেঁধে আমাকে নির্যাতন করেছে মাতবররা।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্যাতনে আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি। স্থানীয় পল্লী চিকিৎিসক মোজাহার হোসেন ডন আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। পরে ওই রাতে একটি ভ্যানভাড়া করে বাসায় চলে যাই। রোববার সকালে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে মান্দা হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছে।’
চিকিৎসাধীন রেজাউল ইসলামের স্ত্রী জানান, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মাতবররা ব্যাপক মারপিট করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি। ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।’
সালিশের সভাপতি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক জানান, ‘পারইটুঙ্গী গ্রামের ঝড়-র মানিব্যাগ চুরির অভিযোগে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তে রেজাউল ইসলামের ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা দিতে অস্বীকার করায় তাকে পেটানো হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
মান্দা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন ঘটনার বিষয়ে অবহিত নন হলে জানান। তবে, এজাহার পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।