রাজশাহীর বাঘায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত কালাম মোল্লার পদ্মা নদী থেকে ভাসমান লাশ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার সাহেবনগরের টুলটুলিপাড়া এলাকা থেকে পরিবারের লোকজন এ লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে আনে। পরে পুলিশ লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। কালাম মোল্লা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জের হেলালপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ আকসেদ মোল্লার ছেলে।
জানা যায়, ২০১৮ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী ফেরার পথে এক লাখ ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবাসী আসলাম আলী ও মাসুদ রানা গ্রেফতার হয়। তারপর কালাম মোল্লাকে খুঁজতে থাকেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। তারপর থেকে কালাম মোল্লার ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার সাহেবনগর এলাকায় ভাইরা হাসান আলীর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। দেশজুড়ে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে তার দেখা মেলেনি। তবে ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশে যোগাযোগ রেখে মাদকের চোরাচালান চালিয়ে আসছিলেন।
এ বিষয়ে কালাম মোল্লার ভাই নজরুল ইসলাম জানান, শনিবার (৭ সেপ্টম্বর) দুপুরের দিকে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার কাগমারীর তালতলা পদ্মা নদীতে গোসল করতে যায়। এ সময় সে ডুবে যায়। তারপর গত তিন দিন থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে স্থানীয়রা জানান, বিএসএফ ক্যাম্পের পাশ দিয়ে নদীপথে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাচ্ছিল কালাম মোল্লা ও তার বন্ধু ভারতীয় নাগরিক চাঁন মিয়া। এ সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাদের আটক করার চেষ্টা করলে কালাম মোল্লা ও চাঁন মিয়া নদীতে ঝাঁপ দেয়। চাঁন মিয়া সাঁতরে উপরে উঠতে সক্ষম হলেও ব্যর্থ হয়ে কালাম মোল্লা তলিয়ে যান নদীর পানিতে।
কালাম মোল্লার ভাতিজা সোহেল মোল্লা জানান, সোমবার রাতে ভারতের আত্মীয় মারফত খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে আমি ও আমার চাচা নজরুল ইসলাম, নিকট আতœীয় মুকুল হোসেন, আরশাদ আলী, দুলাল হোসেনসহ ৬-৭ জনে কালাম চাচার মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। পরে এ বাড়ি থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে লাশ ওই দিনই সন্ধ্যায় পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
কালাম মোল্লার স্ত্রী বলবুলী বেগম জানান, মরদেহের শারীরিক গঠন ও কিছু চিহ্ন দেখে মনে হয়েছে মরদেহটি আমার স্বামী কালাম মোল্লার।
বাঘা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, কালাম মোল্লার মরদেহ দেখে নিশ্চিত হতে পারিনি। মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোট না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এটি কালাম মোল্লার মরদেহ কিনা। কালাম মোল্লা দীর্ঘ দিন থেকে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার নামে রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, পুটিয়া, পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের লালপুর, সিরাজগঞ্জ, ঢাকার টঙ্গী থানায় মাদকসহ ছিনতাই ও হত্যার মামলা রয়েছে। পুলিশের তালিকায় সে একজন শীর্ষ মাদক চোলাচালানি।