শত বছরের পুরাতন রাস্তা দখল করে বাড়ির বেলকোনি নির্মাণের কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরে চরম ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে দশ পরিবারের মানুষ। এনিয়ে দু’গ্রƒপের মাঝে চরম উত্তেজনা করছে। ঘটনাটি ঘটেছে কেশরহাট পৌর এলাকার হরিদাগাছি গ্রামে। প্রশাসনিক ভাবে বিষয়টি দ্রƒত নিরসন করা না হলে সংঘাতের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
সরেজমিনে গিয়ে ও লিখিত অভিযোগের ভিত্তিত্বে জানা গেছে, সম্প্রতি মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার হরিদাগাছি গ্রামের মধ্যপাড়ায় শত বছরের পুরাতন একটি রাস্তা জোরপূর্বক দখল করে বহুতল ভবনের বেলকোনি নির্মাণ করেছেন গ্রামের মৃত লালমন সোনারের ছেলে রুস্তম আলী সোনার। বেলকোনি নির্মাণের সময় স্থানীয়রা বাধা দিলেও মামলার ভয় দেখিয়ে রাতারাতি নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় জনপ্রতিধিদের মাধ্যেমে কোনো সুরাহা না হলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে এসে বেলকোনি অপসারণসহ রাস্তা খুলে দেয়ার নির্দেশ দেন। সেটিও মানেনি বাড়ির মালিক রুস্তম আলী সোনার।
বেলকোনি অপসারণ করে চলাচলের রাস্তার জন্য হরিদাগাছি গ্রামের উমর আলী নামে ব্যক্তি কেশরহাট পৌর মেয়র বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। মেয়র অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত পুর্বক মিমাংসার জন্য সুপারিস করে পৌর বিচার বিভাগে প্রেরণ করেন। পরে পৌর বিচার বিভাগের সভাপতি প্যানেল মেয়র রুস্তম আলী প্রামাণিক মিমাংসা বৈঠকের দিন ধার্য করে উভয় পক্ষকে নোটিশ জারি করেন। ওইদিন অভিযোগকারীসহ ভুক্তভুগিরা উপস্থিত হলেও বাড়ির মালিক রুস্তম আলী সোনার উপস্থিত হননি।
অন্যদিকে জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে এবং সহিংষতা রোধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত বুধবার ঘটনাস্থলে উপজেলা সার্ভেয়ার পাঠান। বিবাদমান জমিসহ পার্শবর্তী জমি জরিপের পর দেখা যায় জবর দখলকারি রুস্তম আলী সোনারের প্রাপ্ত জমির পরিমাণ ০.৯৩৭ একর। অথচ তিনি বেলকোনিসহ রাড়ি নির্মাণ করে দখল করে রেখেছেন ০.১০৪৫ একর জমি। এতে রাস্তাটি বেলকোনি ছাড়াও সয়ং ঘরের ভেতরে প্রায় দুই ফিট ভেতরে ঢুকে যায়। এর পরেও বেলকোনি সরিয়ে নেয়নি রুস্তম আলী সোনার। একারণে ভুক্তভুগি পরিবারগুলোসহ গ্রামবাসির মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এখন তারা শুধু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রাস্তা বের করে দেয়া প্রতিশ্রƒতির অপেক্ষায় রয়েছেন। দ্রƒত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে সহিংষতার আশংঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুস্তম আলী প্রামাণিক।
রাস্তা দখলকারি রুস্তম আলী সোনার বলেন শুধু আমার বেলকোনি রাস্তা বন্ধ করেনি রাস্তার শেষপ্রান্তের অন্য মানুষের গাছপালাও রাস্তার সমস্যা সৃষ্টি করেছে।
সংশিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কেশরহাট পৌরসভার বিচার বিভাগের সভাপতি প্যানেল মেয়র রুস্তম আলী প্রামাণিক বলেন, রাস্তা দখলকারি রুস্তম আলী সোনার ও তার স্ত্রী দুজনই মামলাবাজ মানুষ। এরা শুধু ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে নিরসন করতে জানে না। রাস্তার উপর অবৈধভাবে বেলকোনি তৈরী করা ছাড়াও প্রতিবেশির জমিও জবর দখল করে রেখেছে। এরা কাউকেই পরোয়া করে না। এজন্য মিথ্যা মামলা হামলার ভয়ে কেউ তাদের নানা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস করে না। রুস্তম আলী সোনার অশংখ্য মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ দখল করে বেলকোনি নির্মাণ করেছেন অথচ রাস্তাটি রয়েছে প্রতিবেশির জমির উপর। এবিষয়টি দ্রƒত সমাধান না হলে যেকোনো সময় সংঘাতের আশঙ্কা বিরাজ করছে। এজন্য উপজেলা নির্বাহি অফিসারের দেয়া প্রতিশ্রƒতি অনুযায়ী দ্রƒত রাস্তাটি মানুষের চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশাবাদী তিনি।
কেশরহাট পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান বলেন মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ রাখা উচিত নয়। জনস্বার্থে বিষয়টি দ্রƒত নিষ্পত্তি হোক এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সানওয়ার হোসেন বলেন বলেন ঘটনাস্থলে সার্ভেয়ার দিয়ে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। বেলকোনিসহ পাশ্ববর্তী জমির মালিকদের রাস্তা দেয়ার বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি রাস্তা বের করে না দেয় তবে জনস্বার্থে সরোজমিনে গিয়ে স্থাপনা ভেঙ্গে রাস্তা বের করে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।