জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে, সেখানেও ডাক্তারসহ জনবল সংকট। কাঙ্খিত সেবা প্রদানে হিমসিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে সেবা নিতে আসা প্রসবকালীন গর্ভবতী মা ও মূমূর্ষ রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে।
জানাগেছে, ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০১১ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে সকল কার্যক্রম চলতে থাকে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। এক দিকে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি অন্য দিকে ৩১ শয্যার জনবল থাকায় সেখানেও ঘাটতি। প্রয়োজনীয় মেশিনপত্র চালু না থাকায় কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী।
নিয়মানুসারে এলাকার জনসংখ্যার উপরে ভিত্তি করে জুনিয়র ও সিনিয়র মিলে ১০ জন কনসালটেন্ট থাকার কথা এবং ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ২৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা সেখানে আছে মাত্র ৫ জন। আবার তাদের উপস্থিতি ইচ্ছেমত হাসপাতালের কোয়াটারে কোন এমবিবিএস ডাক্তার থাকেনা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তাদের মধ্যে অনেকেই বগুড়াতে ফ্যামিলি নিয়ে বসবাস করে হাসপাতালে উপস্থিত হয় প্রায় ১১ টায়, ১ টার মধ্যে বেরিয়ে যায়। প্রতিনিদিন আউটডোরে রোগীর উপস্থিতির সংখ্যা প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন। তাদের চিকিৎসা সেবা ঝঅঈগঙ এ্যসিটেন্ড কমিউনিটি মেডিক্যাল কর্মকর্তা (প্যারামেডিক্যাল) দিয়ে চলছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রস্তাবিত পদের সংখ্যা ১৬৭ জনের বিপরীতে বর্তমান আছে ৯২ জন। ডাক্তার এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর গুরুত্বপূর্ণ পদ শুন্য থাকায় অফিসিয়াল কাজকর্মসহ বর্হিবিভাগে রোগীদের টিকেট প্রদান এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কাজ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ রোগী।
গর্ভবর্তী মায়েদের জন্য উঝঋ প্রগ্রাম চালু আছে অথচ আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি ও এক্সেরে মেশিন তিন বছর যাবৎ নষ্ট। প্যথলজি বিভাগে একজন এ্যসিটেন্ড দিয়ে চলে রক্ত, ইউরিন টেস্ট। গর্ভবর্তী মায়েরা নিয়মিত চেকাপ করাতে জেলা সদরে ক্লিনিকে যেতে হয়। গাইনী ডাক্তার থাকলেও এ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার নেই ফলে গর্ভবতী মায়েদের জরুরী সিজারের জন্য জেলা সদরে রেফার্ট করতে হয়।
হাসপাতালে গর্ভবতী ওয়ার্ডে ০৬ বেডে ভর্তি তানিয়া বলেন, আমি এখানে ৩ দিন আগে প্রসবের অল্প ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছি। নার্স বলেছে দু’একদিন সময় আছে আমরা আর একটু দেখি। আজ তারা বলেছে আপনার সিজারের প্রয়োজন এখানে হবে না জেলা সদরে যান। এখানে সিজারের কোন ব্যবস্থা নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. আতাউর রহমান বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় অল্প সংখ্যক ডাক্তার ও জনবল নিয়ে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও অন্যন্য যন্ত্রাংশ অনেক পুরাতন হওয়ায় এগুলোর ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। মেরামত করলেও সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও জনবলসহ মেশিনপত্রের চাহিদা পাঠিয়েছি কর্তৃপক্ষের কাছে। সকলের সহযোগীতা নিয়ে কাজ করে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে মডেল হিসেবে পরিচিত করতে চাই।