ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের পর অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্তে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তালিকা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির কর্ণাটক রাজ্য।
বৃহস্পতিবার কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসভারাজ ভোমাই বলেন, নাগরিক তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। আমরা যতদূর সম্ভব সব তথ্য সংগ্রহ করব। আমরা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সঙ্গে আলোচনা করব।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ব্যাঙ্গালুরু থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে নেলমানগালা তালুকে একটি বন্দি শিবির তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে বিদেশিদের আটক রাখা হবে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। আটককেন্দ্র থেকে অভিবাসীদের পালিয়ে যেতে বাধা দিতে কেন্দ্রের প্রাচীরগুলো কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। পুরোনো এক সরকারি কার্যালয় প্রাঙ্গণ সংস্কার করে একে আটককেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
গত জুলাইয়ে এই বন্দি শিবির নির্মাণে কর্ণাটক রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। অবৈধ অভিবাসীদের নিজেদের দেশে ফেরত না পাঠানো পর্যন্ত এখানেই রাখা হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিবেদনে আরও সুপারিশ করা হয়, বেঙ্গালুরুর আশপাশে অতিরিক্ত আরও কয়েকটি আটককেন্দ্র তৈরি করা হবে। কর্ণাটক রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসরত আফ্রিকান ও বাংলাদেশির প্রকৃত সংখ্যা হিসাব করে আটককেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। দেশের পূর্বাঞ্চলজুড়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে অবৈধ অভিবাসীদের জড়িত থাকার অভিযোগে বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রীয় সংসদ সদস্য পিসি মোহন এবং মহাদেবপুরের এমএলএ (বিধায়ক) অরবিন্দ লিম্বাবালি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ সুবিধা চান।
রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস সরকারের এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানালেও শর্ত জুড়ে দিয়েছে। কর্ণাটক কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি ঈশ্বর খন্দ্রে বলেন,‘রাজ্যে যারা অবৈধভাবে রয়েছেন, তাদের অবশ্যই দেশছাড়া করতে হবে। তবে এনআরসির কারণে ভারতীয় নাগরিকদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সরকারকে সেই বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
গত ৩১ আগস্ট আসামে এনআরসি প্রকাশের পর ১৮ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব প্রশ্নের মুখে। বাদ পড়া এসব মানুষের অনেকেই বাংলাভাষী। যুগ যুগ ধরে আসামে বসবাসরত এই নাগরিকদের এখন মামলা লড়ে নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। সরকার অবশ্য বলছে, এনআরসিতে যাদের নাম নেই, এখনই তাদের বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী ঘোষণা করা হবে না। তাদের বৈদেশিক ট্রাইব্যুনাল ও আদালতে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে।