দিনভর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে ধারালো বটি দিয়ে একাধিকবার কুপিয়ে মা নাজনিন আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে নবম শ্রেণীতে পড়-য়া স্কুল ছাত্রী মোমেনা আক্তার ওরফে বৃষ্টি (১৪)। গত শনিবার রাতে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু হাসান খায়রুল্লার আদালতে মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে সে তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ী থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার। আদালত তাকে ফরিদপুরের সরকারী পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। রোববার তাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।
রাজবাড়ী থানার ওসি আরো বলেন, গত শনিবার সকালে বৃষ্টি’র মায়ের মরদেহ উদ্ধার করার পর নানা ভাবে বৃষ্টিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে সে কোন ভাবেই এই হত্যার কথা স্বীকার করেনি। সন্ধ্যার দিকে তাকে যখন বলা হয় “তোমার প্রেমিক খালাতো ভাই মাসুদকে এখন তোমার সামনে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে”। ঠিক তখন সে মুখ খোলে এবং বলে মাসুদ তার থেকে বয়সে দুই বছরের ছোট। তার পরও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তা কোন ভাবেই পরিবারের সদস্যরা মেনে নিচ্ছে না। মাসুদ রাজধানী ঢাকায় ইলেক্ট্রিক কাজ করে এবং সেখানেই থাকে। গত শুক্রবার বিকালে বৃষ্টি তার এক বান্ধবীর বাড়ীতে গিয়ে মুঠোফোনে প্রেমিক মাসুদের সাথে দীর্ঘ সময় কথা বলে এবং তাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়। যে কারণে সন্ধ্যার দিকে বৃষ্টি মন খারাপ অবস্থায় বাড়ী ফিরে আসে। ওই সময় তার মা তাকে ও প্রেমিক মাসুদকে নিয়ে নানা রকমের বাজে কথা বলে। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে বৃষ্টি ঘরের দরোজা আটকিয়ে ধারালো বটি দিয়ে মাথা, কপাল ও হাতের চারটি স্থানে কুপিয়ে মারাত্নকভাবে জখম করে। পরবর্তীতে তার মা নাজনিনকে হাসপাতালে নিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়, তবে তারা মাকে আর বাঁচাতে পারেনি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর’১৯)বিকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের আগমাড়াই গ্রামের রিকশা চালক মান্নান মৃধার স্ত্রী নাজনিন আক্তার (৪৫) কে তাদের মেয়ে মোমেনা আক্তার ওরফে বৃষ্টি কুপিয়ে হত্যার করে। বৃষ্টি জেলা শহরের ইয়াছিন উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী। পুলিশ হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো বটিটি উদ্ধার করেছে। গত শনিবার রাতে বাবা মান্নান মৃধা বাদী হয়ে মেয়ে বৃষ্টিকে আসামি করে রাজবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।