বাংলাদেশ কৃষি মাতৃক দেশ। এদেশের কৃষকরা সোনার ফসল ধান উৎপাদন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ধান উৎপাদনই হয় তাদের প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু গত কয়েক বছর হতে কৃষক ধান উৎপান করে প্রচুর লোকসানের মুখে পড়েছেন। অনেকেই মহাজনের ঋণের টাকা পরিশোধ না করতে পেরে পথে বসেছেন। বাংলার কৃষক যখন ধান আবাদ করে দাম না পেয়ে হতাশায় ভূগছেন। ঠিক তখনই ধানের আবাদ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষক সাজারুল ইসলাম নিরাপদ উপায়ে পটল চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে আলোর মুখ দেখছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, গোদাগাড়ী উপজেলায় ৫২ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হচ্ছে। গোদাগাড়ী কৃষি অফিস হতে বীজ, সার দিয়ে কৃষকদে ধানের পাশাপাশি সবজি চাষে উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা বিদিরপুর গ্রামের পটল চাষী কৃষক সাজারুল ইসলামের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে।
তিনি জানান, ধানের আবাদ করে কোন লাভের মুখ দেখতে পাই না। বছরের পর বছর লোকসানের মুখ দেখতে হয়। তাই এবার পটল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছি। পটল চাষ করে তিনি লাভের মুখ দেখেছেন বলেও জানান। কৃষক সাজারুল জানান, এবার তিনি ২৩ কাঠা জমিতে পটল ও ঢেঁড়স চাষ করেছেন। এর মধ্যে ১৫ কাঠা জমিতে শুধু পটলের আবাদ। বাংলা মাস অগ্রাহণ মাসে পটলের চাষ শুরু করেন। মধ্যে চার মাস পটলের জমি পরিচর্যা করে চৈত্র মাস হতে গাছে ফল আসতে শুরু করে। এই ১৫ কাঠা জমি আবাদে তিনি এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। তবে চৈত্র মাস হতে গাছ হতে পটল তুলতেই আছেন। তিনি এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা পটল বিক্রয় করে ক্যাশ জমিয়েছেন। আগামীতে আরো ১ মাস এমনি ভাবে ফসল তুলে বিক্রয় করতে পারবেন বলে জানান। তিনি আরো জানান, প্রতি সপ্তাহে এই জমি হতে ৭-৮ মন পটল তুলেন। এখন যতই দিন যাবে ততই আরো বেশী ফসল তুলবেন। প্রতি কেজী পটল তিনি ২৫-২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। সামনের দিনে পটলের দাম আরো বাড়বে ফলে আরো বেশী লাভবান হবে বলে জানান। এবারের মৌসুমে তিনি প্রায় ১ লক্ষ টাকার অধিক ফসল তুলবেন বলে আশা করেন। সেই হিসেবে কৃষক একটি মৌসুমে ৮০-৯০ হাজার টাকা লাভবান হবেন।
কৃষক সাজারুল জানান, আগামিতে তিনি পটলের আবাদ বাড়ীয়ে দিবেন। ধানের আবাদের চাইতে অনেক গুণে এই পটল চাষ লাভজনক বলে জানান।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মাঝে শঙ্কা থাকায় তারা লাভবান হতে পারছে না। কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবানে জন্য সরকারের পক্ষ হতে নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের উদ্ভুন্ধ করা হচ্ছে। উপজেলায় অনেক জায়গাতে কৃষক পটল চাষ করে লাভের মুখ দেখছে। আগামিতে অত্র উপজেলায় পটলের আবাদ বেড়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।