বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মোঃ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেন, এই সরকারের সবচেয়ে বড় ভয় দেশের জনগণ। জনগণ একত্র হলেই সর্বদা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কাতর এই সরকার মনে করে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ কারণেই পুলিশ ভোলায় ঈদগাহ মাঠে জড়ো হওয়া মানুষের প্রতিবাদের ভাষা না শুনে উন্মত্ত হয়ে গুলি করেছে। বর্তমান গণবিরোধী সরকার পুলিশকে একটা কাজই শিখিয়েছে সেটি হলো প্রতিবাদী জনগণের প্রতি গুলি করা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা। অথচ দেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে সুষ্পষ্টভাবে লেখা আছে, সমাবেশের স্বাধীনতার কথা।
তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা-বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হয় না বলেই নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এই ভোটারবিহীন সরকারের দুঃশাসনে মানুষের জীবনের মূল্য এখন পশু-পাখির মূল্যের চেয়ে কমে গেছে। ভোলায় নির্মম ভাবে পুলিশের গুলিতে ৪জন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বগুড়া জেলা বিএনপির উদ্যোগে গতকাল সকালে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল বারী তালুকদার বেলালের সভাপতিত্বে ও কেএম খায়রুল বাশারের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মোঃ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু আরো বলেন, মহান আল্লাহ এবং মহানবী (স) সম্পর্কে অশালীন মন্ত্যবের জেরে সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা প্রতিবাদের জন্য স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জড়ো হয়েছিল। কী ছিল তাদের অপরাধ? তারা একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য জড়ো হয়েছিল। এটি তো কোনো অপরাধ নয়। তারা কোনো ভাংচুর করেনি। কারো ক্ষতি করেনি। প্রতিবাদ করা কি অন্যায় ? তারা কি কোনো দাঙ্গায় লিপ্ত হয়েছিল? যেকোন ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করলে মানুষের বিক্ষুব্ধু হয়ে ওঠা নতুন কিছু নয়। এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, আসল সমস্যাটা হলো এই গণবিরোধী সরকার। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতের নির্বাচনের এই সরকার। এই সরকারকে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি। ফলে জনগণকে সম্মান করা, জনগণের প্রতিবাদের ভাষার প্রতি সম্মান দেখানো, গুরুত্ব দেয়া এইসব গণতান্ত্রিক রীতি ও আচরণগুলো এই সরকার পরোয়া করে না। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও দেশের পক্ষে কথা বলার কারণেই আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। শেখ হাসিনার পলিটিক্যাল মনোপলি নীতির কারণেই নিহত সংবিধান, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা ও স্বচ্ছ নির্বাচন। বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো দুর্নীতির মামলায় আটক করা হয়নি। তাকে আটক করা হয়েছে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এবং রাজনৈতিক আন্দোলন ছাড়া তাকে মুক্ত করা সম্ভব না। রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করতে হবে। আর এ আন্দোলনে কর্মীর অভাব হবে না। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘কয় লক্ষ লোক তারা কারাগারে নিবে? এরকম সাহসী নেতৃত্ব না থাকলে বেগম জিয়ার মুক্তি হবে না।
’সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাবেক সাধারন সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন, বিএনপি নেতা লাভলী রহমান, মাহবুবর রহমান বকুল, এম আর ইসলাম স্বাধীন, সহিদ উন নবী ছালাম, তৌহিদুল ইসলাম মামুন, তাহা উদ্দিন নাহিন, ওমর ফারুক খান, শহিদুল ইসলাম বাবলু, এনামুল কাদের এনাম, ভিপি অধ্যাপিকা শামিমা আকতার পলিন, মনিরুজ্জামান মনির, সাইদুজ্জামান শাকিল, এসএম রাসেল মামুন, আবুল হোসেন মোল্লা, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খাদেমুল ইসলাম খাদেম, যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আলহাজ¦ আকরাম হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদল আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল, জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান, শ্রমিকদলের আবদুর রহিম পিন্টু প্রমুখ। সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গদলের বিভিন্ন ইউনিট মিছিল সহকারে যোগ দেয়। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। এদিকে সমাবেশের দু’পাশে তারকঁটার বেরিকেড দেয় পুলিশ। এ ছাড়া সমাবেশের পাশে জলকামান সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশ শেষ হয়।