বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপে প্রভাবে গত কয়েকদিন টানা বর্ষণে জয়পুরহাটের কালাইয়ে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির হয়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং মাঝারি বাতাসে কাঁচা ও পাকা ধানের গাছগুলো হেলে পড়ে ক্ষেতের মাটি সঙ্গে ও পানি নিচে ডুবে আছে। কৃষকদের স্বপ্নের কাঁচা ও পাকা ধানের ক্ষেত মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে। এতে করে উপজেলার হাজার হাজার কৃষকেরা বর্তমান দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে ও কালাই কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ওই ৫টি ইউনিয়নে এবার চলতি আমন মৌসুমে ১৩ হাজার ৭শ ৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে হাইব্রিড জাতের ধান রোপন হয়েছে ১হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে এবং উফশী জাতের ধান রোপন হয়েছে ১২ হাজার ৭শ ২০ হেক্টর জমিতে। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপে প্রভাবে টানা ভারী বর্ষণে এবং মাঝারি বাতাসে আগাম জাতসহ বিভিন্ন জাতের কাচা-পাকা আমন ধানের ব্যাপক হারে ক্ষতির হয়েছে। অবিরাম বর্ষণ ও মাঝারি হাওয়ার কারণে ধানের গাছগুলো হেলে পরে জমির মাটির সঙ্গে ও পানির নিচে ডুবে আছে। ডুবে যাওয়া ধানগুলো নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য কৃষকেরা মাঠে নেমে তাদের ধানের চারাগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। এবার তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ফলন কম হবে বলে কৃষকেরা আশঙ্কা করছেন। সেই সঙ্গে কৃষকেরা সঠিক সময়ে তাদের কষ্টের ও স¦প্নের ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগছেন।
কালাই পৌরসভার সড়াইল মহল্লার কৃষক নজরুর ও তোফাজ্জাল বলেন, টানা বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে বেশীর ভাগ ধানের গাছগুলো হেলে পড়ে পানির নিচে ডুবে আছে। এতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
উপজেলার হাতীয়র গ্রামের বর্গাচাষী হামিদুর ও ঝামুটপুর গ্রামের খলিল বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সঠিক সময়ে কষ্ট ও ধারদেনা করে এবার আমন ধান লাগিয়েছি। ধানের চারাগুলো ভালো পরিচর্যা করাই জমিতে ধানের ফলন ভাল হচ্ছিল। কিন্তু হটাৎ টানা ভারী বৃষ্টি ও মাঝারি বাতাস হওয়ায় সব জমির ধান গাছগুলো ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন দুঃশ্চিন্তায় ভুগছি।
এই বিষয়ে কালাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, গত কয়েক দিন টানা বর্ষণ এবং মাঝারি বাতাসের ফলে এই উপজেলাতে কিছু কিছু স্থানে কাঁচা ও পাকা আমন ধানের গাছগুলো হেলে পড়েছে। তবে ধানের ক্ষতি তেমন হবেনা। আর কৃসকদের চিন্তার কোন কারণ নেই। আবহাওয়া ভালো হলেই জমি থেকে পানি নেমে যাবে। তখন ওই জমির ধানগুলো আগের মতোই ভালো হবে। তাছাড়া উপজেলার সকল কৃষদের সু-পরামর্শসহ সব ধরণের সহযোগীতা করে আসছি। তাই আশা করছি এবারে আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।