ইউএনও মনিরা পারভীনের হস্তক্ষেপে জমি লিখে নিয়ে রাস্তায় ফেলে যাওয়া আমতলীর সেই বৃদ্ধ বাবা আবদুল গনি হাওলাদারের ঠাঁই হলো বড় ছেলে ইসমাইল হাওলাদারের ঘরে। ইউএনও বৃদ্ধ গনি হাওলাদারসহ তার বড় ছেলেকে ডেকে এনে আর্থিক সহায়তা দিয়ে বাবাকে ভরণ পোষনের দায়িত্ব দিয়ে দিলেন। এর ব্যত্যয় হলে ছেলেদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইউএনও মনিরা পারভীন। গত রোববার এ বিষয়ে একটি স্ব-চিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন গণ মাধ্যমে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, উপজেলা চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্রা গ্রামের এক সময়ের ধনাট্য ব্যাক্তি আবদুল গনি হাওলাদার। তার ছিল ২৫ একর জমি। দুই স্ত্রীর পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ে। বয়সের ভারে চোখে দেখেন না, কানে কম শোনেন ও ঠিকমত কথা বলতে পারেন না। এ সুযোগে দুই স্ত্রীর পাঁচ ছেলে ইসমাইল, শাহজাহান, নুরুল হক, জামাল ও হেলাল বাবাকে ভালোবাসার অভিনয় করে যখন যেভাবে পেরেছে জমিজমা লিখে নিয়েছে। সম্প্রতিক মেঝ ছেলে শাহজাহান হাওলাদার বাবাকে চিকিৎসা করানোর নাম করে তার আমতলী পৌরসভার বাসায় নিয়ে যায়। ওই বাসায় নিয়ে তার সর্বশেষ জমিটুুকু লিখে নেন। গত শনিবার সকালে শাহজাহান হাওলাদার ছেলে সোহেল দাদাকে একটি গাড়ীতে করে নিয়ে হলদিয়া ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। ওইদিন দুপুরে পেটের ক্ষুধায় কাতরাতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে একটি দোকান ঘরে বসিয়ে পাউরুটি খেতে দেয়। খবর পেয়ে আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার ও এসআই মহিউদ্দিন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ছোট স্ত্রীর ছেলে জামালের কাছে দিয়ে আসেন। গত রোববার এ বিষয়ে একটি স্ব-চিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন গণ মাধ্যমে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সোমবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বৃদ্ধ বাবা আবদুল গনি হাওলাদার ও তার বড় ছেলে ইসমাইলকে ইউএনও অফিসে ডেকে নেন। পরে ইউএনও বৃদ্ধ বাবার ভরণ পোষনের দায়িত্ব বড় ছেলে ইসমাইল হাওলাদারকে দিয়ে নিজ তহবিল থেকে তিন হাজার টাকা আর্থিক অনুদান এবং সরকারী ত্রাণ তহবিল থেকে এক মাসের ভরণ পোষন দিয়ে দেন এবং একই সাথে বয়স্ক ভাতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
আমতলীর ইউএনও মনিরা পারভীন বলেন, ওই বৃদ্ধা বাবাকে তার বড় ছেলে ইসমাইল হাওলাদারের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। এরপর ওই বৃদ্ধ বাবার ভরণ পোষনে কোন ব্যত্যয় হলে ছেলেদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।