লালমনিরহাটে পরকীয়া প্রেমের প্রেমিকাসহ আল আমিন (২৮) নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে প্রেমিকার বাড়ি লালমনিরহাট পৌরসভার বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। দিন ভোর আলোচনা শেষেও রাত ১২টা পর্যন্ত কোন সমাধা না হওয়ায় আটক আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতভর প্রেমিকার বাড়িতে আটক থাকেন পুলিশ কনস্টেবল আল আমিন।
পুলিশ কনস্টেবল আল আমিন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে। তিনি পুলিশ কনস্টেবল হয়ে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ড. আবদুল মজিদের দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, বসুন্ধরা এলাকার মৃত দেলওয়ার হোসেনের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে লায়লা পারভীন সুমির (৩৮) সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল আল আমিনের। পুলিশ সদস্য আল আমিনের বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বিজিবি সদস্য স্বামী রফিকুলকে তালাক দেন সুমি। গত ২১ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি নিয়ে বাড়ি আসেন আল আমিন। এরপর গত তিন দিন ধরে পরকীয়া প্রেমিকা সুমির বাড়িতে তার সঙ্গে রাত্রিযাপন করেন। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে অপারগতা প্রকাশ করেন প্রেমিক আল আমিন। একপর্যায়ে প্রেমিকা ও তার পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে বাড়িতে আটকে রাখেন।
বিষয়টি জানতে পেয়ে পুলিশ কনস্টেবল আল আমিনের বাবা ছেলে নিখোঁজ দাবি করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রেমিকা সুমির বাড়ি থেকে সুমিসহ আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আটক পুলিশ সদস্য আল আমিন বলেন, তার (সমি) সাথে আমার কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিল কোন দিনই ছিল না। সে টাকার বিনিময়ে তার কাছে যেতেন। আর এ কারনেই সে তার সাথে দৈহিক মিলনের ভিডিও ধারণ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন আল আমিন। এর আগেও সে (সুমি) এভাবেই আরো ২/৩জন ব্লাকমেইল করে বিয়ে করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের তালাক দেন। এই বিষয়টি তার স্বামী বিজিবি সদস্য জানার পর পরই তাকে তালাক দিয়েছে। বিষয়টি এলাকাবাসীরও জানা আছে বলে আল আমিন জানান।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সুমি বলেন, অনেক বার নিষেধ করার পরও সে বার বার তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই প্রেমের সম্পর্ক পরে দৈহিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়। বিষয়টি তার স্বামী জানতে পারলে পরে তাকে তালাক দেয়। এরপর তার বাড়িতে আল আমিনের যাতায়াত বৃদ্ধি পায়। তাকে বার বার বিয়ের কথা বললে সে কাল ক্ষেপন করে। পরে ওইদিন বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় তাকে আটক করে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
এদিকে, প্রেমিকা সুমি আক্তার বিয়ের দাবিতে অনড় থাকলেও প্রেমিক আল আমিনের স্ত্রী আরজু আক্তার এ বিয়েতে রাজি নয়। সন্ধ্যা থেকে থানা চত্ত্বরেই উভয় পক্ষের দফায় দফায় বৈঠক হলেও এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত (রাত ১২টা) কোনো সমাধান হয়নি।
লালমনিরহাট সদর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, পরকীয়া প্রেমিকাসহ আল আমিনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। বিয়য়টি নিয়ে উভয় পক্ষ দিন ভোর আলোচনা শেষেও কোন আপোষে আসতে না পরায় করতে ভিকটিমকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তার পরেও উভয়পক্ষের আলোচনা চলছে। অভিযোগ পেলে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর) মামলা রেকর্ড করে আসামি আল আমিনকে জেল হাজতে পাঠানো হবে।