শুরুতেই হোঁচট খেল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। ঘোষিত সময়ে করা যায়নি উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিগুলো। অথচ এক সপ্তাহের মধ্যেই আট উপজেলা এবং পাঁচ পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল পূর্বে। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত একটি কমিটিও ঘোষণা দিতে পারেনি দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।। গত ২১ অক্টোবর দলীয় এক সভা করে দক্ষিণ জেলার আওতাধীন সকল উপজেলা, পৌরসভার কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। আহ্বায়ক কমিটির সভা থেকেই তিনি ওই ঘোষণা দেন। বাস্তবে এখনো কোন কমিটিই হয়নি। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, সুন্দর কমিটি ঘোষণার জন্য একটু দেরি হচ্ছে ঠিকই। তবে আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে ওই কমিটিগুলো ঘোষণা দেওয়া হবে।
একাধিক সূত্র জানায়, গত ২১ অক্টোবর এক সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আট উপজেলা, পাঁচ পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ওই সভায় বিলুপ্ত করা হয়েছিল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাভুক্ত সব উপজেলা এবং পৌরসভার বিদ্যমান সাংগঠনিক কমিটি। কিন্তু সেই বেঁধে দেওয়া এই সময় গত ২৮ অক্টোবর অতিবাহিত হয়ে গেছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা নিয়ে বেশ সরব হয়ে উঠেছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এতে অনেকেই আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। নানাভাবে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও। প্রতিটি কমিটিতে তিন থেকে চারজন করে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির অধীন ৮টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভায় সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে।
এগুলো হচ্ছে- বাঁশখালী উপজেলা ও পৌরসভা, চন্দনাইশ উপজেলা ও পৌরসভা, লোহাগাড়া উপজেলা, বোয়ালখালী উপজেলা ও পৌরসভা, পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা, সাতকানিয়া উপজেলা ও পৌরসভা, আনোয়ারা উপজেলা ও কর্ণফুলী উপজেলা। দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির এখন অনেকটা পৌষমাস চলছে। কারণ; ওই কমিটি গঠন নিয়ে দলের মধ্যে চাঙ্গাভাব ফিরে এসেছে। তাছাড়া আগামি এক মাসের মধ্যেই প্রতিটি ইউনিয়ন ও ইউনিট পর্যায়ে বিএনপির সব কমিটি গঠন করা হবে। এজন্য সরব-সরগরম রয়েছে বিএনপির দক্ষিণের রাজনৈতিক ময়দান। এবার ত্যাগী এবং যোগ্য নেতাকর্র্মীদের কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে বলে তৃণমুল নেতাকর্মীরা খুবেই আশাবাদী। যারা দলের জন্য জেল খেটেছেন এবং মাঠে অবস্থান করছেন-এমন নেতারা দলের নেতৃত্বে আসলে সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন আরো বেগবান হবে বলে মনে করেন দলীয় ত্যাগী নেতারা।
এর আগে গত ২ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে আহ্বায়ক, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাসকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ খানকে সদস্য সচিব করে ৬৫ সদস্যের দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কমিটি ঘোষণা দেন। এ সময় ঘোষিত নতুন এ কমিটিকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সকল উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে সম্মেলন করার কেন্দ্রীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকেই দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব ফিরতে শুরু করে।