ঠাকুরগাঁয়ের হরিপুরে ময়না খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধুকে তাঁর স্বামী জাকির হোসেনসহ শশুর পরিবারের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করা অভিযোগে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের বড় ভাই আশরাফ আলী।
ডাক্তারের কাছে স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর হরিপুর উপজেলা হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে স্বামী জাকির হোসেন উধাও হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
হত্যার অভিযোগ এনে শুক্রবার সকালে নিহত গৃহবধুর বড় ভাই হরিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে থানা পুলিশ সকাল ১১টায় হরিপুর উপজেলা হাসপাতাল থেকে ময়না খাতুনের লাশ উদ্ধার করেন।
স্বামী জাকির হোসেনসহ ৭ জনের নামে হত্যা মামলা রজু করে থানা পুলিশ গৃহবধুর লাশ শুক্রবার দুপুরে ময়নাতদন্ত করার জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে প্রেরণ করেন।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের স্বামী জাকির হোসেনের নিজ বাড়িতে।
ময়না খাতুন হরিপুর উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী এবং পীরগঞ্জ উপজেলার আব্দুল কাদেরের মেয়ে।
গৃহবধু ময়না নিহতের পর থেকে জাকির হোসেনসহ তার পরিবারের লোকজন আতœগোপনে চলে গেছে বিষয়টি স্থানীয় একাধিক সুূত্র নিশ্চিত করেছেন।
নিহত গৃহবধুর বড় ভাই আশরাফুল আলী বলেন পারিবারিকভাবে ২০০৪ সালে আমার বোন ময়না খাতুনের হরিপুর উপজেলার জয়নালের ছেলে জাকির হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ময়না তাঁর স্বামীর সংসার নিয়ে ভালোই চলছিল। কিছুদিন যেতে না যেতেই জাকির হোসেন মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়ে। জাকির হোসেন মাদক সেবনে আসক্ত হওয়ার পর থেকেই আমার বোন ময়না খাতুনকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও শমানষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। স্ত্রী নির্যাতনের কারণে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ বৈঠকও হয়। এরই মধ্যে জাকির হোসেন দিনাজপুরের সুরভী নামে এক মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায় জাকির হোসেন ঐ মেয়েকে কিছুদিন আগে আমার বোনের অজান্তে বিয়েও করে ফেলে। এই ঘটনাটি নিয়ে স্বামী স্ত্রী মধ্যে দ্বন্দ সৃষ্টি হয়। মূলত এই দ্বন্দের জের ধরেই আমার বোন ময়না খাতুনকে স্বামী জাকির হোসেনসহ তার শশুর বাড়ির লোকজন শুক্রবার দিবাগত রাত্রে কয়েক দফা মারপিট করেন। এই মারপিটের কারণেই ময়না খাতুনের মৃত্যু হয়।
হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিরুজ্জামান বলেন নিহতের বড় ভাইয়ের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় একটি হত্যা মামলা রজু করা হয়। পরে গৃহবধু ময়নার লাশ হরিপুর হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই প্রকৃত ঘটনা বের হবে। অপরদিকে এজাহারকৃত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।