রাজধানীর সড়কগুলোতে পার্কিং নৈরাজ্য বন্ধের স্মার্ট কার পার্কিং ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এ ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের মতো স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থার মাধ্যমে রাস্তায় ইচ্ছেমতো কার পার্কিং বন্ধ করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাস্তায় মাটির নিে সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। প্রথম পর্যায়ে গুলশান ও উত্তরার মোট ১০০টি স্থানে স্মার্ট কার পার্কিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। ওই দুই স্থানে সরকারি খোলা স্থানে বা সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জমিতে এ ব্যবস্থা চালু করা হবে। একইসঙ্গে রাস্তার পাশের সকল সরকারি সংস্থার বেদখল গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করে নাগরিকদের নির্বিঘেœ রাস্তায় চলাচলের স্বার্থে কাজে লাগিয়ে পার্কিংয়ের জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ডিএনসিসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিএনসিসির পরিসংখ্যান মতে রাজধানীর গুলশান ও উত্তরার রাস্তাগুলো অন্য যে কোনো এলাকার রাস্তার তুলনায় পরিকল্পিত। তাছাড়া বেশ কিছু এলাকায় বিশাল রাস্তা ও এর আশপাশে কার পার্কিং করার মতো স্থানও রয়েছে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে ওই দুই স্থানে স্মার্ট কার পার্কিং ব্যবস্থা চালু করা গেলে পরবর্তীতে অন্য সকল স্থানে এমন পদ্ধতি চালু করা হবে। তবে নতুন যুক্ত হওয়া সকল ওয়ার্ডে এ পদ্ধতি কিভাবে চালু করা যায় সে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএনসিসি’র মেয়র। কারণ নতুন তৈরি করা সকল রাস্তার পাশেই এ ব্যবস্থা চালু করা গেলে পরবর্তীতে কার পার্কিংয়ের বিষয়ে ভাবতে হবে না। তাই এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজধানীর রাস্তায় গাড়ি পার্কিং নিয়ে এক প্রকারের নৈরাজ্য চলছে। গাড়িচালকদের ইচ্ছেমতো যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করে রাখতে দেখা যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ শতাধিক স্থানে কার পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান থাকলেও চালকদের সেসব স্থানে কার পার্ক করতে তেমন আগ্রহী হতে দেখা যায় না। ফলে কার পার্কিংয়ে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়। আইন অমান্য করে কার পার্কিংয়ের কারণে পুলিশকে গাড়ির চালক তথা মালিকদের কাছ থেকে ব্যাপক পরিমাণে জরিমানা আদায় ও গাড়ি ক্রোক করতেও দেখা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে রাস্তায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি ডাম্পিং স্টেশনেও পাঠানো হয়। তবুও কমানো যাচ্ছে না যত্রতত্র কার পার্কিং। এমন পরিস্থিতি থেকে স্থায়ীভাবে উত্তরণের জন্য ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ রাস্তায় নির্দিষ্ট স্থানে ও ভবনের কার পার্কিংয়ের স্থানের বাইরে কোন গাড়ি পার্ক করলে তাকে অটোমেটিক জরিমানার আওতায় আনার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, স্মার্ট পার্কিং পদ্ধতি চালু করা হলে কোন ব্যক্তি নিয়মের বাইরে কার পার্কিং করলেই আইনের আওতায় চলে আসবে। সেজন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ রাস্তায় মাটির নিচে আধুনিক সেন্সর বসাবে। ওসব সেন্সরের মাধ্যমে কোন গাড়ি যদি রাস্তায় পার্ক করা হয় তাহলে ওই গাড়ির চেচিস নম্বর, গাড়ির লাইসেন্স নম্বর সিটি কর্পোরেশনের কাছে চলে আসবে। একইসঙ্গে প্রতিটি গাড়ির মালিককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ম্যাসেজ দিয়ে অপরাধের কথা ও জরিমানা বা পার্কিং ফি জানিয়ে দেয়া হবে। তবে এর আগে গুলশান ও উত্তরায় গাড়ি পার্কিং হবে এমন রাস্তায় যাতে কোন প্রকার পানি না জমে, সেন্সর বসাতে কোন প্রকার অসুবিধা সৃষ্টি না হয় তার ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে ওসব রাস্তায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু করতে মেয়র প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে স্মার্ট পার্কিংয়ের বিষয়টি ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।