সরকারের সফলতার মধ্যে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় বিনামূল্যে বই বিতরণ শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্য এসেছে। আগামী বছর থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নতুন বইয়ের সাথে স্কুলের পোশাক ক্রয়ে ৫০০ টাকা দেয়ার পরিকল্পনা করছে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে মিটিংও হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে গত মাসে বাজেট প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়েছে।
ছোট্ট শিশুদের হাতে নতুন বই, কোমলমতি সোনামনিদের মুখভরা অকৃতিম হাসি ও খুশির ঝিলিকে আত্মহারা দেখে মনে হয়, পুরো বাংলাদেশের আকাশই যেন হাসছে। কি পরম আদর ও যতেœ শিশুরা বইগুলোকে নিজের বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে থাকে, যা দেখে পিতা-মাতাসহ উপস্থিত সর্বসাধারণের চোখেও পানি চলে আসে। এরকম আনন্দ উদযাপনে শিশুদের পড়ালেখার দিকে ব্যাপক আগ্রহ বেড়ে যায়। এ ধরণের মহাপ্রয়াস পৃথিবীর খুব কম দেশেই আছে বলে আমরা জানি। গোলাপের মতো সুন্দর, হাসনাহেনার সুগ্রাণ যাদের গাঁয়ে, সে কোমলমতি শিশুদের মুখে এ হাঁসি ফোটানোর জন্য ধন্যবাদ শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের। নতুন বই হাতে পেয়ে শিশুরা যে গগণবিদারী খুশী ও আনন্দ পেয়ে থাকে, পৃথিবীর অন্য কোন কিছু দিয়েই তা সম্ভব নয়। নতুন স্কুলড্রেস বানানো তো দুরের কথা, দেশের অধিকাংশ গরিব ঘরের সন্তানেরা টাকার অভাবে যেখানে পড়ালেখাই বন্ধ রাখে, সেখানে নতুন বইয়ের আনন্দের সাথে আগামী বছর থেকে যোগ হতে যাচ্ছে স্কুলড্রেস। এ উদ্যোগ শিশুদের জন্য খুশির উপর খুশির বিষয়। একটি স্কুলের সব শিক্ষার্থী যদি একই রকমের স্কুল ড্রেস পড়ে আসে, তাহলে তাদের মধ্যে ভালো একটি ফিলিংস কাজ করবে। আমরা আশা করবো, অবশ্যই স্কুল থেকে নির্দিষ্ট মানের পোশাক কিনে অথবা তৈরি করে দেয়ার বিষয়টি ইনশিওর হবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য নববর্ষের উপহার নতুন বইয়ের সাথে স্কুলড্রেস যোগ হলে পড়াশোনায় তাদের উৎসাহ আরো দ্বিগুণ বেড়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের নানা উদ্যোগের সুফলে আগের তুলনায় এখন ছেলে-মেয়েরা স্কুলে বেশি যায়, পড়াশোনায়ও ভালো করছে। এছাড়াও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বইয়ের সঙ্গে মাথাপিছু ২ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। স্কুলড্রেস, জুতা ও ব্যাগ কেনার জন্য এ টাকা দেয়া হবে। গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে এক সমন্বয় সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আমরা আশা করবো, এ কাজ করতে গিয়ে যেন পয়সার শ্রাদ্ধ না হয়, টাইম লস না হয়, যাতে করে নিখুঁতভাবে, সততার সাথে কাজগুলো করা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। উপবৃত্তির টাকা যেভাবে রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে শিওর ক্যাশে মা-দের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যায়। ঠিক এমনভাবেই এই স্কুলড্রেস কেনার টাকাটাও মায়েদের কাছে পৌঁছাতে হবে।