প্রতি বছর চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে অসংখ্য শুঁটকির চাতাল বসতো। দিনরাত শুঁটকির চাতালে নারী ও পুরুষ শ্রমিক ব্যস্ত থাকতো মাছ বাছাই করা ও শুকানোর কাজে। বিভিন্ন বিলপাড়ে বসতো ছোট-বড় অসংখ্য শুঁটকির চাতাল। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রতিাদন চাতালগুলোতে মাছ শুকানো হতো। কিন্তু এবার ভিণœ চিত্র। মাছের আকালে শুঁটকি চাতালগুলো তুলে নেওয়া হচ্ছে। বিলের পানি শুকিয়ে গেছে। মাছ সংকটের কারণে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা পড়েছেন সংকটে। ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার চাটমোহর উপজেলার খলিশাগাড়ি বিল,আফরার বিল.ডেঙ্গার বিল,ডিকশি বিল ও হান্ডিয়াল কাটাজোলা এলাকা ঘুরে দেখা গেল,হাতে গোটা চার/পাঁচটি শুটকির চাতাল বসেছে। তা আকারে ছোট। মাছ নেই বললেই চলে।
উপজেলার খলিশাগাড়ি বিলপাড়ে ধানকুনিয়া এলাকায় শুঁটকির চাতাল দিয়েছেন আঃ মমিন। জানালেন,মাছ নেই। অল্প কিছু পুঁটি পাওয়া গেলেও,দাম চড়া। আগে প্রতিটি বিল থেকে দেশী প্রজাতির শোল.টাকি,বোয়াল,টেংরা,পুটি,চান্দাসহ বিভিন্ন মাছ সংগ্রহ করা হতো। দিনরাত চাতালে ব্যস্ত থাকতে হতো। কিন্তু এবার মাছ নেই।
আরেক শুঁটকি ব্যবসায়ী আক্কাস আলী জানান,এবার আর শ্রমিক লাগছে না। যে পরিমাণ মাছ মিলছে,তা নিজেরাই শুকাচ্ছি। আগে চলনবিলের শুঁটকি সারাদেশে রপ্তানী করা হতো। কিন্তু এবার এলাকার চাহিদা টোনোই দুরুহ।
বিলপাড়ের হান্ডিয়াল,ছাইকোলা,নিমাইচড়া,নবীণ,চিনাভাতকুর গ্রামের মৎস্যজীবিরা জানালেন,এবার দু’দফা বিলে পানি বাড়লেও অল্পদিনেই শুকিয়ে গেছে। ফলে যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে,তার ব্যাপক চাহিদা স্থানীয় বাজারে। সে কারণে কেউ আর চাতালে মাছ দিচ্ছেন না। তারা জানালেন,এবার প্রশাসন একাধিকবার সোঁতি জাল অপসারণ করেছে। ফলে পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে মাছও যমুনায় চলে গেছে। মাছ ধরা যায়নি।
মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সদস্যরা জানালেন,এ অঞ্চলে মাছের কোন অভয়াশ্রম নেই। যা কারণে দেশী মাছ সংরক্ষণ করার কোন সুযোগ নেই। বর্ষায় পানি আসলে দেশী মাছ আসে। পানি শুকিয়ে গেলে মাছ চলে যায়,মারা হয়। চলনবিল অঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশী প্রজাতির মাছ। যার কারণে এবারশুঁটকির চাতালগুলোতে মাছের সংকট তীব্র হয়েছে। যা পাওয়া যাচ্ছে,তা খুবই কম। নভেম্বর মাসের মধ্যেই হয়তো সকল চাতাল তুলে নেওয়া হবে।