বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ভোলা’সহ ৯টি জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে দ্বীপ উপজেলা মনপুরার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বিশেষ করে বিচ্ছিন্ন চরগুলোর বাসিন্দারা রয়েছে চরম আতঙ্কে।
এরই মধ্যে ২দিন ধরে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ওই সব চরাঞ্চলের মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও সিপিপি সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ মেঘনা পাড়ে গিয়ে সর্তক করতে নিজেরা মাইকিং করতে দেখা গেছে।
ঘূর্ণীঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় মনপুরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১টি কন্টোলরুম খোলা হয়েছে। জনগনকে সচেতনতায় ঘূর্ণীঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর (সিপিপির) উদ্যোগে মাইকিং (প্রচার) করে সতর্ক করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসতে শুরু করেছে মানুষ।
স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, মসজিদের ঈমাম, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বেসরকারী এনজিও প্রতিষ্ঠান জনগনকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রশাসনের উদ্যোগে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল থেকে লোকজনকে মূল ভুখন্ডের আশ্রয়কেন্দ্রেগুলোতে আনার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণীঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি কোনো কোনো এলাকায় ভারী বর্ষণ হচ্ঝে। পুরো উপজেলা মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। নদী এবং সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। অনেক জেলে নৌকা নদীর তীরে চলে আসতে শুরু করেছে। মেঘলা আবহাওয়ায় চারিদিকে শুনশান নিরবতা। বাজার কিংবা রাস্তা-ঘাটে মানুষের আনা-গোনা কমতে শুরু করেছে।
দিন পেরিয়ে রাত যতই ঘনিয়ে আসছে এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ততই ঘনীভূত হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজনের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, এখনো পর্যন্ত বাড়িতেই আছি। তবে অবস্থা বেশী খারাপ মনে হলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবেন বলে জানান। তবে ট্রলারযোগে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় বিচ্ছিন্ন চরনিজাম, কলাতলীর চর এবং চর শামসুদ্দিন থেকে নারী-পুরুষ এবং শিশুরা মূল-ভূখন্ডের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসতে শুরু করেছে। তাদের খাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খিচুড়ির আয়োজনের পূর্ব প্রস্তুতি করে রেখেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, জেলে প্রতিনিধি’সহ সামাজের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধির সাথে দফায় দফায় মিটিং করেছেন। উপজেলা পর্যায়ে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
এব্যাপারে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বশির আহমেদ বলেন, ঘূর্ণীঝড় মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুতি মূলক সভা করেছি। বিচ্ছিন্ন চরগুলো থেকে মানুষকে নিরাপদে নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপি মাইকিং করছে। কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। এ ছাড়া মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।