বগুড়ায় প্রকাশ্যে দিনের বেলায় বাজার এলাকায় আবদুর রহিম (৩৪)নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী ও হ্যচারী ব্যবসায়ীকে উপর্যূপরি ভাবে কুঁপিয়ে হত্যা করেছে এলাকার একটি চিহ্নিত গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। হত্যাকান্ডের সঠিক কারণ নিশ্চিত নয়।
গতকাল (বৃহস্পতিবার ) সকাল সোয়া ১০টার দিকে এই নৃশংস হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বগুড়া শহরতলীর অদ্দিরগোলা বাজার এলাকায় হাজারো মানুষের সামনে।
নিহত আবদুর রহিম বগুড়া সদরের সাবগ্রাম ইউনিয়নের জিগাতলা চকঝপু দক্ষিণপাড়া এলাকার মোজাহার আলীর পুত্র এবং পেশায় একজন মাছের পোনা ব্যবসায়ী।
এব্যপারে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল জানান, আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী হিসাবে নিহত আবদুর রহিম গত ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাইল হক সরদারকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তাকে প্রধান আসামি করা হয়।এ নিয়ে এলাকার দীর্ঘদিন যাবত প্রতিপক্ষের লোকজন তার উপর বিভিন্ন ভাবে মোটার অংকের টাকা ক্ষতিপূরন দাবী করে আসছিল।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১০ টার দিকে আবদুর রহিম তার ব্যাক্তিগত মোটর সাইকেলযোগে উদ্দিরখোলা বাজারে এলে তার উপর হামলা চালানো হয়। সূত্র জানায়, তিনি তার মোটর সাইকেল নিয়ে স্থানীয় একটি হোটেলের সামনে দাঁড়ান। এ সময় বাজারের বাজারের পূর্বদিকে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল প্রথমে তাকে সেখানে ঘিড়ে ফেলে । এরপর তারা বাজারে হাজারো মানুষের সামনে তাকে উপূর্যুপরি ভাবে কোপাতে থাকে। এমন সময় সে মোটর সাইকেল থেকে মাটিতে লাটিয়ে পড়লে তাকে আবারো কোপাতে থাকে তারা। এর এক পর্যায়ে তার পেটে ছোরা ঢুকিয়ে দিয়ে তার একটি হাত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেরা হয়। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার মাথা ও গলা পেছন থেকে কোপায় সন্ত্রাসীরা। তার মৃত্যু নিশ্চিত হবার পর হত্যাকারী বীর দর্পে এলাকা থেকে সরে যায়। ঘটনার পর পরই গোটা এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভীত লোকজন সেখান থেকে দৌড়ে পালাতে থাকে। ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সটকে পড়ে।
একটি নির্ভরয্যে সূত্র জানায়, প্রকাশ্য দিনের বেলায় বাজারে হাজারো লোকের সামনে মুখচেনা ৮/৯জন অস্ত্রধারী আবদুর রহিমকে কুপিয়ে হত্যা করলেও কেউ তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
সূত্র অরো জানায়, রক্তাক্ত অবস্থায় আবদুর রহিম দীর্ঘ সময় রাস্তায় উপর পড়ে থাকলেও তাকে উদ্ধারে কোন প্রকার আগ্রহ দেখায়নি কেউ। পরে ঘটনার প্রায় ঘন্টা খানেক পর পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
লাশের সুরতহাল তৈরীকারী পুলিমের এসআই নিরাঞ্জন রায়, এ প্রতিনিধিকে জানান, নিহতের ডান হাত ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, মাথা ঘাড়ে এবং শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেলের সনাতন চক্রবর্তী এবং সদর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি সার্বিক ) এসএম বদ্দিউজ্জামান ও স্থানীয় নারুলী ফাঁড়ী পুলিশের ইন্সপেক্টরজামিরুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।