 |
রংপুরের পীরগাছায় জমি-জমা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দিনে দুপুরে বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ৩দিন অতিবাহিত হলেও মামলা রুজু না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তায় রয়েছেন। এঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য পীরগাছা থানার এক এসআইকে রংপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে কৃষক ছবুর আলী তার ক্রয়কৃত বসতভিটা ও আবাদী ২০ শতাংশ জমি দীর্ঘ দিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ওই কৃষককে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে একই গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুল করিমের ছেলে জয়নাল আবেদীন। সে গত ২৭ মে ও ৩ জুলাই ভাড়াটিয়া একদল সন্ত্রাসীসহ দু’দফা হামলা চালায় ছবুর আলীর বাড়িতে। তারা ছবুর আলী, তার স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বউকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এঘটনায় ছবুর আলী পীরগাছা থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করে। ওই মামলা দায়েরের পর প্রভাবশালী জয়নাল আবেদীন প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বৃহস্পতিবার রাতে ছবুর আলীকে তারভর তার বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে অপর একটি মামলা জেলহাজতে প্রেরন করেন। ছবুর আলী জেলহাজতে আটক থাকা অবস্থায় শুক্রবার সকালে জয়নাল আবেদীন পুনরায় একদল সন্ত্রাসী নিয়ে ছবুর আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে এবং ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল, স্বর্ণালংকার ও ২টি গরু লুট করে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা ছবুর আলীর ছেলের বউ পারুল বেগম (২৫) ও স্ত্রী ফুলেরা বেগম (৫০)`কে মারপিট করে গুরুতর জখম করে। ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের ভাংচুর করা ঘরে অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়। ঘটনার সময় একাধিকবার সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী অফিসার পীরগাছা থানার এসআই ইদ্রিস আলীকে একাধিকবার সংবাদ দেয়া হলেও তিনি কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। উল্টো সন্ত্রাসীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সহযোগিতা করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ছবুর আলী বলেন, তার দায়ের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই ইদ্রিস আলীর সহযোগিতায় প্রভাবশালী জয়নাল আবেদীন তাকে রাতভর বাড়ির ভিতরে অবরুদ্ধ রেখেছিল এবং বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ঘটনার সময় তার স্ত্রী ও পরিবারের মহিলা সদস্যরা বসতবাড়ি ও জীবন রক্ষার জন্য মোবাইলফোনে কান্নাকাটি করে কাকতি-মিনতি করলেও এসআই ইদ্রিস আলী তা কর্ণপাত করেননি। এ-ব্যাপারে শনিবার সন্ধ্যায় জেলহাজত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের নিকট গিয়ে অভিযোগ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এসআই ইদ্রিস আলীকে রংপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজড’র নির্দেশ দেন।
পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সরেস চন্দ্র বলেন, এব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি এসআই ইদ্রিস আলীর ক্লোজড’র সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কি কারনে তাকে ক্লোজড করা হয়েছে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত নন।