 |
বীক্ষণকোণ
দেখবো দেখবো করে
অনেকদিন দেখা হলো না
তারপর হয়তো হয়েও গেলো
সেদিন প্রত্যক্ষ ভাবে
রুক্ষের রক্ষিতা এ শহরে
বৃষ্টি বিমুখ শ্রাবণের চব্বিশে
তোমাকে দেখার পর
আমার জিজ্ঞাসায়, অমীমাংসিত দহনে
টাপুরটুপ উত্তরের শীতল মোম কুচি
তোমাকে দেখেছি
স্বপ্নের নিবিড়তম স্বাদে
তুমি অনন্য এক চামচ মুখরতা,
যেখানে থেকে আমি আকাশ ছুঁই
বাস্তবতার সেই বাস্তুতে
তুমি অবিকল্প চিলেকোঠা
তোমার দুঃখী খোলা জানালায়
আগামীর দূরবীন আমাকে দেখায়
বরষার ভেজা ক্ষেতে অক্ষত অঙ্কুর
শঙ্কার বিস্ময় ঘন্টা বাজলে বাজুক
সহসাই হাত তালি শুনে
হচকিত পায়রার মতো উড়াল দিও না
কুড়ালে কাটবে আমার সুখের ভিত
এভাবে কত কার নষ্ট অতীত
আজ ধূসর ধ্বংসাবশেষ
তাই, না পাবার ¯্রােত বোধে
তুমি হও শালীন শালুক
আমি না ঘুম রাতের অবিকল সংগ্রামে
তোমাকে তুলে নিলাম একাগ্র বিশ্বাসে
পৃথিবী বদলে যায়, মা বদলায় না
মা কিভাবে যেনো জাদু শিখেছিলেন
উনুনের পাশে তিনবেলা পুড়তে পুড়তে
যুগের পর যুগ ঘরোয়া একঘেঁয়েমিতে ভুগে
এখনও তিনি শুধু ‘মা’ হয়েই আছেন।
একটা চামচ নিয়ে স্টিলের প্লেটে টংটং
আর কতক্ষণ? তাড়াতাড়ি! তাড়াতাড়ি!
আমি লাটিমের মতো চুলোর চারপাশে ঘুরতাম
অশ্রুর একটা বিন্দু আমার মা
সেবার স্বয়ংক্রিয় মেশিন আমার মা
সহ্যের ছিমছাম নৌকো আমার মা
ধৈর্যের বিপুল পাহাড় আমার মা
বিনয়ের অফুরান ঝরনা আমার মা
হেসে বলতেন, ‘এইতো বাবা হয়ে গেছে, নে’
এই যে কতোটা বদলে গেছি
মায়ের চারপাশে আর ঘুরি না
তবু মা এখনও ‘মা’ হয়েই আছেন
মা এখনও নিউক্লিয়াস, মা এখনও সূর্য
মায়ের কক্ষপথে চিরদিনই আমি তার পৃথিবী
পৃথিবী বদলে যায়, মা বদলায় না।
চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে
ভুলে যাই জীবনে কতোবার হয়েছে বৃষ্টি দেখা
মেঘাছন্ন আষাঢ়ের আবছায়া মাখা
প্রবল বর্ষণে বানভাসি জনপদ
অতিক্রান্ত বেলার ময়ূখ নদ
ভুলে যাই সবই ভুলে যাই, মনে কেনো রাখি না?
গুণে গুণে অঙ্ক কষে মানুষ দেখি, পাখি না!
পাখি কি তবে গণনার বাহিরে?
রবি ঠাকুর, আমার অন্তরে কি ‘আলোক নাহিরে’?
সারাটা হৃদয়ে আঁধারের মাখামাখি
বোকার মতোন দুঃখকে পুষে রাখি,
ছেড়ে দিই কত মেগাবাইট মেমোরি
আর নতুন বরষা আনে দেয়ালের ঘড়ি
মাটি ভিজে জায়, ভেজে গাছের পাতারা
নতুন দুঃখ এসে দিয়ে যায় নাড়া,
বিগত বৃষ্টিকে যদি আমি ভুলে যেতে পারি
পুরনো দুঃখ নিয়ে তবে কেনো বাড়াবাড়ি?
যদি পারে বিস্মৃত হতে অনেক দেখা বৃষ্টি
তবে ছোটোছোটো দুঃখের সরল সমষ্টি
আমাকে কেনো কাঁদায় বারবার?
সময় হলো অন্তরে তাকাবার।