মুলাদীতে জমি বিরোধের জেরধরে মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতিপক্ষের বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করেছে সন্ত্রাসীরা। গত মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের মৃত হাসেম খন্দকারের ছেলে সালাম খন্দকারের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাঙ্গচুর ও গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় কমপক্ষে ৪জন আহত হয়। পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে সালাম খন্দকারের ঘরের ভিটা সমতল করে কলাগাছ রোপন করে। সালাম খন্দকারের ছেলে শাহজাহান খন্দকার জানান তারা ২০০৮ সালে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের আলাউদ্দীন বেপারীর পুত্র সেকান্দার বেপারীর কাছ থেকে ৫৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে প্রায় ১১ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। কিছুদিন আগে আগে একই এলাকার আঃ কাদের মালের ছেলে আতাহার মাল ও আঃ ওয়াহেদ কাজীর ছেলে মামুন কাজীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ওই জমি দখলের জন্য তাদেরকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সালাম খন্দকার ঘর-বাড়ি ছেড়ে দিতে অস্বীকার করলে ২৩ এপ্রিল সকালে আতাহার মাল, মামুন কাজী, আবু তাহের মালের নেতৃত্বে ২৫/৩০জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হাত বোমা, রামদা, লেজা, লাঠিসোটা, হাতুড়ি, শাবল নিয়ে সালাম খন্দকারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙ্গচুর করে করে। এ সময় সালাম খন্দকারের স্ত্রী সালেহা বেগম তাদের বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করে টেনে হিচরে শ্লীলতাহানী করে বাইরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। সালেহা বেগমের ডাকচিৎকারে তার মেয়ে তামান্না আক্তার, স্বামী সালাম খন্দকার, ছেলে শাহজাহান খন্দকার ছুটে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও মারধর করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় হামলাকারীর সালাম খন্দকারের ঘরের চালা, বেড়াসহ সবকিছু নিয়ে যায়। এ ছাড়া ঘরে থাকা নগদ টাকা, দলিলপত্র, মূল্যবান কাগজপত্র স্বর্ণালংকার, ২টি গরু, ১টি ছাগল, প্রায় ৬ মন চাল, হাড়ি-পাতিল লুট করে নেয়। পরে মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসীরা ঘরের ভিটা কোদাল দিয়ে সমতল করে সেখানে কলাগাছ রোপন করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মুলাদী হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় সালাম খন্দকারের ছেলে শাহজাহান খন্দকার বাদী হয়ে আতাহার মাল, মামুন কাজী, পালাশ মাল, আবু তাহের মাল, শহীদুল মালসহ ১৮জনের নাম উল্লেখ করে ২৩জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মুলাদী থানার এসআই সবুজ হোসেন মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য এমদাদ হোসেন ফকির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান স্থানীয় ভাবে মিমাংশার মাধ্যমে লুটকৃত গরু ও ছাগলসহ অন্যান্য মালামাল ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সফিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু মুছা হিমু মুন্সী হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। মুলাদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইদ আহমেদ তালুকদার জানান হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।