লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় বাক বিতন্ডার জের ধরে মাহিমা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধুকে বেধরক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই নির্যাতিত গৃহবধূ পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
বুধবার (০৪ মে) দুপুরে মাহিমা বেগম বাদী হয়ে পাটগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে ওই উপজেলার বুড়িমারী উফারমারা গুড়িয়াটারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে জমি জবর দখলের একটি বিচার দেয়া হয় চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাতকে। ওই বিচারে চেয়ারম্যান প্রতিপক্ষের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় মাহিমা বেগম ও তার স্বামী শামসুল হকের সাথে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এ কারণে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন দিয়ে মাহিমা বেগম ও তার স্বামীকে বিভিন্নভাবে হুমকী ধামকী দেয়। এরই জের ধরে গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত ২ টার দিকে চেয়ারম্যান নিশাতের নেতৃত্বে রফিকুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান ও রুবেলসহ তার লোকজন গৃহবধূ মাহিমার বাড়িতে হামলা করে ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে মাহিমাকে এলোপাতারী মারধর করে। এতে মহিমা মারাত্মক আহত হয়। পরে তার আত্মচিৎকারে আসপাশের লোকজন ছুটে এলে চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন পারিয়ে যায়। এ সময় গৃহবধূকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাটগ্রাম থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে মহিমা পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন অবস্থায় রয়েছে।
এ বিষয়ে বাদী মাহিমা বেগম জানায়, মতিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি আমার জমি জবর দখল করলে তিনি তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিশাতকে বিচার দেয়। বিচারে চেয়ারম্যান তার কোন সুবিচার না করে উল্টো মতিয়ারের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ কারণে চেয়ারম্যানের সাথে তাদের কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান রাতে তার লোকজন নিয়ে আমার বাড়ীতে আসে কিছু বোঝার আগে তিনি ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন আমার বাড়ি ভাংচুর করে ও আমাকে মারধর করে। আমার স্বামী ও ছেলে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকেও মারধর করে।
বুড়িমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, মাহিমা অনেক আগে থেকে পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত। বিভিন্ন জায়গা থেকে মেয়ে নিয়ে এসে তার বাড়িতে দেহ ব্যবসা চালাতো। তাই এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩০ এপ্রিল রাতে তার বাড়িতে একটি মেয়েসহ আটক করে তার বাড়ি ভাংচুর ও তাকে মারতে থাকে। এ সময় আমি আমার ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য ও গ্রাম পুলিশসহ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করেছি মাত্র। আর সেদিন তাকে উদ্ধার করাই তার অন্যায় হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তবে তিনি প্রশাসনকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানান।
পাটগ্রাম থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মনসুর আলী জানায়, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।