ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ৯ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের চন্ডিবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের অসহযোগিতার কারনেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
হামলায় আহতদের মধ্যে ঘোষপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মুন্নু মোল্যা (৪২), স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রবীণ কর্মী কাজী রফিউদ্দিন (৬০), তার ছেলে কাজী শামীম (৩৫), মোস্তফা মোল্যা (৫০), সাইফুর রহমান (৫০), আবদুর রাজ্জাক (৭০), মতিয়ার রহমান (৫০), কবির হোসেন (৫৫) ও সাহেব আলী (২৬) কে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক এসএম ফারুক হোসেন বলেন, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া এবং আলাউদ্দিন আহমেদের সমর্থক ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জামাল মেম্বার ও আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিশোঠা নিয়ে ঘুমন্ত মানুষদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া বলেন, আগেরদিন রাতে আমার লোকদের উপর ঘোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনের লোকেরা হামলা চালিয়ে আহত করে। একারণে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।
হামলায় গুরুত্বর আহত কাজী রফিউদ্দিনের মেয়ে বলেন, ভোররাতে সেহরী খেয়ে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। এরপর সকালে ঘুম ভেঙে দেখি লাঠিশোঠা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলাকারীরা আমাদের বাড়িঘর ঘিরে রেখেছে। এরপর আমার বাবা ও দুই ভাইকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে গুরুতর আহত করেছে। তিনি বলেন, ওদের সাথে আমাদের জায়গাজমি বা অন্যকিছু নিয়ে কোন বিরোধ নেই। শুধুমাত্র আধিপত্য বিস্তারের জন্যই এভাবে ওরা নৃশংসভাবে হামলা করেছে।
এব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। হামলার ব্যাপারে পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘোষপুর ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি ঘোষপুর ইউনিয়নের বালুমহাল ইজারাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চাঙ্গা হয়ে উঠে। মাসখানেক আগেও দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭ জন আহত হন।