রংপুরের পীরগঞ্জে দরিদ্র পরিবারের জমি আছে অথচ ঘর নেই,এমন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণে সীমাহীন অনিয়মে বাধাঁ দেয়াকে কেন্দ্র করে তুলকালাম,ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ঘটনাস্থলে শেষ পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের হলদিবাড়ী (মধ্যপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, জমি আছে ঘর নেই এই প্রকল্পের আওতায় এ বছর পীরগঞ্জ উপজেলায় প্রথম পর্বে ২২৫টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হলে কাবিলপুর ইউনিয়নের হলদিবাড়ী (মধ্যপাড়া) গ্রামের মৃত: শাখাওয়াতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম এর নামে ১৭৫ বর্গফুট আয়তনের একটি মুল টিনের ঘরে ১২টি পিলারসহ বারান্দায় ৫টি এবং ল্যাট্রিনে ৪টি পিলার সম্বলিত ঘর নির্মাণে প্রতিটি ঘরের জন্য ১ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। ঘর নির্মানের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রকল্প কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টি এম এ মমিনের পুর্বের কর্মস্থল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থেকে আগত মিস্ত্রী শফিকুল ইসলাম কোন প্রকার ঢালাই ছাড়াই পিলার স্থাপন করেছে। ঘরের মেঝে ৩ ইঞ্চি ঢালাই দেয়ার কথা থাকলেও দেড় বস্তা সিমেন্ট দিয়ে মাত্র ১ ইঞ্চি ঢালাই দেয়ার সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য আহসান হাবিবসহ এলাকাবাসী বাধা দেয়। ফলে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে পীরগঞ্জ থানার এস আই বুলবুল ,এ এস আই সোলায়মানসহ ৫ পুলিশ উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সবকিছু অবগত হবার পর এস আই বুলবুল বলেন- শতকরা পঞ্চাশভাগ কাজ করলেও এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হতো না। কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত মিস্ত্রী শফিকুল বলেন-আমাকে টিএনও স্যার যেভাবে বলেছে আমি সেভাবেই করছি। এখানে আমার কিছু করার নেই। স্থানীয় ইউপি সদস্য আহসান হাবিব বলেন-কাজটির শুরু থেকেই সুবিধাভোগীসহ তার পরিবারের লোকজনকে নির্মান সামগ্রী পরিবহন করতে হয়েছে। এমনকি ঘরের মেঝেতে ভিট বালু দেয়ার কথা থাকলেও সুবিধাভোগীরা তাদের উদ্যোগেই মাটি ভরাট করা হয়েছে। কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম করা হচ্ছিল। তাই এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে কাজে বাধা প্রদান করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন- পরিপত্রে স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যানকে সম্পৃক্ত করে প্রকণ্প কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হলেও কোন ইউনিয়নেই তা করা হয়নি। এমনকি কোন কোন ইউপি চেয়ারম্যান জানেনই না এ তথ্য। এর আগে পিলার নির্মানের সময়ও নানা অনিয়মরে আশ্রয় নেয়া হয়েছে। সে সময়ও পুর্বের কর্মস্থল পার্শ^বর্তী ঘোড়াঘাট উপজেলা হতে মিস্ত্রী নিয়ে এসে নি¤œমানের কাজ করে নিয়েছেন। পিলারগুলো মেশিনে তৈরির কথা থাকলেও তা তৈরী হয়েছে স্থানীয় কারিগরি পদ্ধতিতে। পিলারে ছয় এমএম গ্রেড রডের স্থলে ব্যবহার করা হচ্ছে পৌনে ৫ এমএম রড। পিলারের রড বাঁধাইয়ে ক্ষেত্রে রিং (চুড়ি) হিসেবে রডের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে জিআই তার। প্রথম শ্রেণির বদলে দ্বিতীয় শ্রেণির ইটের খোয়া (ডাস্টসহ) দিয়ে পিলার বানানো হয়েছে। পিলার তৈরীতে বালু সিমেন্টের মিকচার ৪৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করার নিয়ম থাকলেও একসাথে অনেকগুলো পিলারের মিকচার চলেছে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। পিলারের উপর ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত পানি দেয়ার অর্থাৎ কিউরিং করার কথা থাকলেও পর্যাপ্ত পানিও দেয়া হয়নি। ঘর নির্মানে সীমাহীন অনিয়মে বাধা দেয়ার উপজেলা নির্ব্হাী কর্মকর্তা টিএমএ মমিন কর্তৃক নানাাভাবে হুমকি-ধমকী ও মামলা দায়েরের হুমকি দেয়ার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।