সিটি কর্পোরেশনের হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমান ভূয়া ব্যাংক একাউন্ট খুলে জালিয়াতি করে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোহেল ইাঞ্জনিয়ার্সের স্বত্তাধীকারি গোলাম হোসেন লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৫ সালে বরিশাল নগরীর চৌমাথা বাজার থেকে আমতলা মোড় পর্যন্ত সিসি ক্যামেরার কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারি গোলাম হোসেন। কাজ শেষ করে বিসিসি কর্তৃপক্ষের কাছে তার পাওনা ৮৮ লাখ ২৩ হাজার চারশ’ টাকার বিল চাইতে গেলে হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমান তার সাথে বিভিন্নভাবে টালবাহানা শুরু করেন। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন সেই টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ দূর্ণীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোঃ ইসরাইল হোসেন জানান, সকল দূর্ণীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার বর্তমান সিটি কর্পোরেশন। হিসাবরক্ষন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতিসহ আরও অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যার ভিত্তিতে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ইতোমধ্যে তাকে ওএসডি করেছে।
এদিকে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ জালিয়াতির অভিযোগ উলেছে। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল মোতালেব ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে রাজশাহী সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজী ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ সংগ্রহ করে সিটি কর্পোরেশনে জমা দিয়েছেন। কিন্তু ওই সনদ অবৈধ উপায়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনিচুজ্জামন। তিনি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের তিন সদস্যের কমিটি গত ২৩ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় মঞ্জুরী কমিশন ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল রাজশাহী সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজী ইউনিভার্সিটিকে চার বছর মেয়াদী বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু আব্দুল মোতালেবকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর স্নাতক সনদ দেয়া হয়েছে। ফলে চার বছর মেয়াদী সনদ দেয়া হয়েছে মাত্র এক বছর পাঁচ মাসে।
এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে কাজ করেছেন। এ বিষয়ে দুদক তদন্ত করবে। আরে দুদকের তদন্তে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।