সড়ক যোগাযোগ নেই, আছে শুধু বিস্তৃর্ণ খাল আর বিল। কোমলমতি শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে হয় নৌকা যোগে, এমন অবহেলিত জনপদটি পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি। যে বয়সে শিশুরা বাবা-মায়ের হাতধরে নিরাপদ বাহনে বা পরিবেশে স্কুলে যাওয়া-আসা করে, সে বয়সেই এ অঞ্চলের শিশুরা সারা বছরেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যাপাঠদানে ছেটি-ছোট নৌকায় বিক্যালয়ে যেতে হয়। বর্ষামৌসুমে খালে কচুরিপানার বিড়ম্বনাসহ পানির শ্রোতে নৌকাডুবিতে মৃত্যুর আতংঙ্কে থাকে কোমলমতি এসব শির্থীরা। আবার শীত মৌসুমে খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জোয়ার-ভাটার অপেক্ষায় থাকতে হয়।
পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানে প্রায় হাজারও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যাতায়াতের নেই কোন সড়ক পথ। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশী অবহেলিত বলদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা একমাত্র ভরসা নৌকা। বর্ষামৌসুমের চিত্রচারিদিকে পানি আর খাল-বিল। আবার শীত কালে খাল বিল শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। তখন চলে না কোনো যানবাহন জোয়ার-ভাটার উপর নির্ণয় করে দেয়া হয় স্কুলের সময়সূচি। এভাবেই নৌকা যোগে বিলঞ্চলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের আসতে হয় বিদ্যালয়ে। ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বলদিয়া সরকারি প্রামিক বিদ্যালয়টি জরার্জীণ অবস্থায় থাকায় ভবনের এক পাশ দেবে যাওয়ায় ওয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরায় বৃষ্টির দিনে ভিজে যায় শিক্ষার্থীদের বই-খাতা। যে কোনো মূহূর্তে এ ভবনটি ধর্ষে পড়ে জীবনহানীর ঘটনা ঘটতে পারে।
উপজেরা শিক্ষা অফিসার দিলদার নাহার বলেন, শিক্ষাখাতে বর্তমান সরকার আগের চেয়ে অনেক বাজেট বাড়িয়েছেন এবং শিক্ষার মানও গত ৩০ বছরের চেয়ে অনেক উন্নাত হয়েছে। এ সমস্যারও অচিরেই সমাধান হবে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরেও এ ব্যপারে জানানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক,মোঃ সেলিম হোসেন বলেন, প্রায় শত বছরের এ সমস্যার কথা বিভিন্ন প্রধান শিক্ষাকগন ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটি উর্ধ্বতনকর্মকর্তাদের জানানো হলেও প্রত্যন্ত এ পল্লি অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোর দিকে কোনো সরকারের নজর পড়েনি। তবে বর্তমান সরকারের কিছুটা নজর পড়লে তা অপ্রতুল।
বিদ্যলয়ের অবকাঠামো সমস্যসহ বিভিন্ন প্রতিক’লতার মাঝে আর জীবন হারানোর ভয়ের মধ্যেও এসব বিদ্যালয়ে থেকে প্রতি বছরই শতভাগ শিক্ষার্থীরা পি. এস.সি পরীক্ষায় পাশ করে থাকে।